পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপ্রসঙ্গ ১ প্রস্তাবনা প্রথম রচনাকাল থেকেই রক্তকরবী নিরস্তর আমাদের কৌতুহল জাগ্রত করে চলেছে নানাভাবে । পাঠকের ও দর্শকের চোখে এই নাটক যেখানে আনন্দের উৎস, সাহিত্যসমালোচকের কাছে সেখানে তা নানা প্রশ্ন ও জিজ্ঞাসারও সামগ্রী । নাটকটির ওপর আলোচনারও যেন শেষ নেই, নিত্য নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে দেখবার জন্যে আমরা উন্মুখ হয়ে আছি, এখনও । অনেক চেষ্টা করেও এই নাটকটির অভিনয় রবীন্দ্রনাথ তাঁর আয়ুকালে শান্তিনিকেতনে করাতে পারেন নি, যেমন করিয়েছেন অন্যান্য নাটকের ক্ষেত্রে । অথচ নাটকটির প্রতি রবীন্দ্রনাথের মমতা ছিল অপরিসীম। নাটকটির জন্মবৃত্তান্ত থেকে তা বোঝা যায়। নাটকটির সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটে মুদ্রিত সংস্করণের মাধ্যমে। তার বাইরে ‘রক্তকরবী'র যে অস্তিত্ব রয়ে গেছে, তার দিকে আমাদের দৃষ্টি সচরাচর পড়ে না, বা আগে পড়ে নি। যারা একটু বেশি আগ্রহী ও অনুসন্ধিৎসু, তারা প্রসঙ্গক্রমে জেনেছেন যে গোড়াতে নাটকটির নাম ছিল যক্ষপুরী, পরে নন্দিনী । তাঁদের আগ্রহ এখানে এসেই থেমে যেত, অথবা বলা যায় এইটুকু জেনেই তাঁদের আগ্রহ প্রশমিত রাখতে হত, কেননা, এর বেশি তথ্য আমাদের সামনে কখনো কেউ তুলে ধরতে চেষ্টা করেন নি । ১৯৭৮ সালে প্রয়াত পুলিনবিহার সেনের সাগ্রহ সমর্থনে ও রবীন্দ্রভবনের আনুকূল্যে নাটকটির একটি পাঠভেদ-সংবলিত সংস্করণ প্রস্তুতির দায়িত্ব পেয়ে এবং কাজে কিছুদূর অগ্রসর হয়ে বুঝতে পারি রক্তকরবী সম্পর্কে আমাদের ধারণা কত অসম্পূর্ণ থেকে গেছে। রচনার শুরু থেকে বিভিন্ন খসড়ার ভিতর দিয়ে এগিয়ে গিয়ে এ-নাটক শেষ পর্যন্ত কীভাবে মুদ্রিত রূপটিতে পোঁচেছে, তার পরিচয় দেবার জন্যই এই পাঠভেদসংস্করণের প্রয়াস। এর ভিতর দিয়ে নাটকটি কীভাবে প্রথম খসড়া থেকে মুদ্রিত একাদশ পাঠ পর্যন্ত স্তরে স্তরে রূপান্তরিত হয়েছে, তা বিশদভাবে বোঝা যাবে। এমন একটি কাজের পিছনে একটি আদর্শ বা প্রণালীতত্ত্ব অনুসরণের প্রসঙ্গ ওঠে। নাটকের পাঠভেদ-সংবলিত গবেষণামূলক কাজের একটা আদর্শস্থানীয় দৃষ্টান্ত দেখতে পাই দুখণ্ডে সমাপ্ত হোরেস হাওয়ার্ড ফানেস -সম্পাদিত ‘হ্যামলেট'-এর পাঠভেদ-সংবলিত সংস্করণের মধ্যে। তাঁর কাজের আদর্শ গুরুত্বপূর্ণ হলেও নানা