পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(2(2 ○ তারও মলাটে কবির হস্তাক্ষরে 'নন্দিনী লেখা (সমগ্র খসড়াটি আসলে দুটি খাতায় বিধূত)। তাহলে বলা চলে, ‘রক্তকরবী নাটকের 'নন্দিনী স্তরে কবি নিজের হাতে যে দুটি খসড়া রচনা করেন এটি তারই একটি। বহুরূপী পত্রিকায় প্রকাশিত 'নন্দিনী এবং রবীন্দ্রভবনের সংগ্রহে সংরক্ষিত নন্দিনীর খসড়ার পাঠ পারস্পরিকভাবে মিলিয়ে দেখে মনে হয়েছে যে রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত নন্দিনীর পাণ্ডুলিপির অব্যবহিত আগেই উক্ত নন্দিনীর পাণ্ডুলিপি রচিত হয়েছিল। তাহলে বলা যায় যে উক্ত নন্দিনীর পাণ্ডুলিপি প্রকৃতপক্ষে রক্তকরবী'র চতুর্থ খসড়া। যেহেতু মূল পাণ্ডুলিপি দেখবার সুযোগ হয় নি, এবং নিছক মুদ্রিত একটি পাঠকে তদনুসারী বলার বাহ্যিক কোনো সুযোগ নেই আপাতত, তাই বর্তমানে পাঠভেদ-সংস্করণটিতে রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত "নন্দিনীকে পঞ্চম খসড়া হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এবং তদনুসারেই পাঠগুলি গ্রথিত করা হয়েছে। সুতরাং এই পাঠ-ভেদে চতুর্থ খসড়ার পাঠের কোনো উল্লেখ পাওয়া যাবে না | প্রসঙ্গত, পাণ্ডুলিপিগুলির আকৃতিগত পরিচয়, এবং সেই সূত্রে রক্তকরবী নাটকটি বিভিন্ন খসড়ার ভিতর দিয়ে কীভাবে চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে তার রূপরেখাটি তুলে ধরা গেল : (এক) প্রথম খসড়া। পাণ্ডুলিপি সংখ্যা 151 (ix)। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩৭ । আয়তন : 13.9" x 8.3", অথবা 34 সেমি x 21 সেমি । চার পৃষ্ঠা সংবলিত ১০টি সূক্ষ্ম রুল-টানা স্বতন্ত্র কাগজে কবির নিজের হস্তাক্ষরে কালো কালিতে খসড়াটি লিখিত হয়েছে। পৃষ্ঠাগুলির ডানদিকের কোণে ইংরেজিতে পৃষ্ঠাঙ্ক দেওয়া হয়েছে। যেমন, 1, 2, 3, 4 ইত্যাদি। পাণ্ডুলিপিটি পাঠ-পরিচয় ও প্রাসঙ্গিক তথ্যপঞ্জিসহ রবীন্দ্রভবন-প্রকাশিত ‘রবীন্দ্রবীক্ষা’র ১৬শ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে, মুদ্রিত আকারে পাণ্ডুলিপির পাঠ যথাযথ রক্ষিত হয়েছে। এমনকী ছত্র, বানান, ও যতিচিহ্নের ক্ষেত্রেও। মনে হয়, এই পাণ্ডুলিপিতে যে পৃষ্ঠাসংখ্যা দেওয়া হয়েছে তা কবিকৃত নয়, পরবর্তীকালে কেউ তা দিয়ে থাকবেন । কিন্তু মাঝের কিছু অংশে পৃষ্ঠাসংখ্যা ঠিকমতো চিহ্নিত করা ছিল না আগে। পারম্পর্যসূত্রে পাঠ মিলিয়ে পৃষ্ঠাসংখ্যাগুলি এই কাজটি করার সময় ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। লক্ষণীয়, এই খসড়ার কোথাও নাটকটির স্পষ্টত কোনো নামের উল্লেখ নেই। অবশ্য, ৩৭-সংখ্যক অর্থাৎ শেষ পৃষ্ঠায় উপরের দু-কোণে পেনসিলে রক্তকরবী৯। লিখিত । এ যে কবির লেখা নয়, তা সহজেই অনুমেয়। পাণ্ডুলিপিটির লিখনপদ্ধতি বিশেষভাবে অনুধাবনযোগ্য। প্রত্যেক পৃষ্ঠা খাড়াভাবে যথাবিধি দুই সমান ভাগে ভাজ করে বা দিকের অংশে মূল পাঠ লিখিত হয়েছে, ডান দিকের অংশ ফাঁকা রাখা হয়েছে সংশোধন বা সংযোজনের কাজে ব্যবহারের জন্য। লক্ষ করা দরকার, এই বিশিষ্ট লিখন-পদ্ধতি রক্তকরবীর সবগুলি পাণ্ডুলিপিতেই অনুসৃত। কোনো পাণ্ডুলিপিতেই রচনাকাল ও রচনাস্থানের উল্লেখ নেই।