পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©ᎸᎼ মধ্যে ফাঁক পড়তে পায় না এবং যক্ষপুরীর নিরস্তর উন্নতি হতে থাকে। এখানকার মোড়লরা একসময়ে খোদাইকর ছিল, নিজগুণে তাদের পদবৃদ্ধি এবং উপাধিলাভ ঘটেচে। কর্মনিষ্ঠতায় তারা অনেক বিষয়ে সর্দারদের ছাড়িয়ে যায়। যক্ষপুরীর বিধিবিধানকে যদি কবির ভাষায় পূর্ণচন্দ্র বলা যায় তবে তার কলঙ্কবিভাগের ভারটাই প্রধানত মোড়লদের পরে । এছাড়া একজন গোসাইজি আছেন, তিনি নাম গ্রহণ করেন ভগবানের কিন্তু অন্নগ্রহণ করেন সর্দারের। তাঁর দ্বারা যক্ষপুরীর অনেক উপকার ঘটে । জেলেদের জালে দৈবাৎ মাঝে মাঝে অখাদ্য জাতের জলচর জীব আটকা পড়ে। তাদের দ্বারা পেটভরা বা ট্যাকভরার কাজ ত হয়ই না, মাঝের থেকে তারা জাল ছিড়ে দিয়ে যায়। এই নাট্যের ঘটনাজালের মধ্যে নন্দিনী । ‘সুনন্দা বর্জিত করে ] নামক একটি কন্যা তেমনিভাবে এসে পড়েচে । মকররাজ যে বেড়ার আড়ালে থাকেন সেইটেকে এই মেয়ে টিকতে দেয় না বুঝি । সঙ্গে দেখা হবে। জানলাটি যে কি রকম তা সুস্পষ্ট করে বর্ণনা করা অসম্ভব। যারা তার কারিগর তারাই তার কলাকৌশল বোঝে । নাট্যঘটনার যতটুকু আমরা দেখতে পাচ্ছি তার সমস্তটাই এই রাজমহলের জালের জানলার বাহির বারান্দায় । ভিতরে কি হচ্ছে তার অতি অল্পই আমরা জানতে পাই। এর পাশাপাশি, একই সঙ্গে, আর-একটি লেখায় রবীন্দ্রনাথ ‘রক্তকরবী সম্পর্কে তার বক্তব্য নিবেদন করেছেন । তার এই প্রতিবেদনটি (কবির অভিভাষণ) ‘প্রস্তাবনা’ রূপে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত ‘রক্তকরবী'র প্রথম সংস্করণে (১৩৩৩ সাল)-র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তখন নাটকটির প্রকাশক ছিলেন রায়সাহেব জগদানন্দ রায় । আলোচ্য অভিভাষণটি তার আগে প্রবাসী’ পত্রিকার বৈশাখ ১৩৩২ (২৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড] সংখ্যায় “রক্তকরবী শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর” শীর্ষক শিরোনাম নিয়ে প্রকাশিত (পৃ. ২২২৪) হয়। বলা বাহুল্য, রক্তকরবী'র প্রথম সংস্করণের অন্তর্ভুক্ত প্রস্তাবনা এবং ‘প্রবাসী’তে প্রকাশিত ‘রক্তকরবী রবীন্দ্রনাথের সম্মতিক্রমেই প্রকাশিত হয়েছিল । ১৩৩৩ সালের কুড়ি বছর পরে ১৩৫২ সালে নাটকটির যখন পুনমুদ্রণ করা হয়, তখন প্রকাশক ছিলেন পুলিনবিহারী সেন। এই পুনর্মুদ্রণের সময় থেকে নাটকটির ভূমিকা স্বরূপ প্রস্তাবনা'র জায়গা নেয় ‘নাট্যপরিচয়, যার বিবরণ একটু আগেই দেওয়া হয়েছে। লক্ষণীয়, ‘প্রস্তাবনা’ শীর্ষক আলোচনাটি, স্থানান্তরিত হলেও বর্জিত হয় নি। ১৩৫২ সালের পুনর্মুদ্রণে এই অংশটি গ্রন্থশেষে গ্রন্থপরিচয়'-এর অন্তর্ভুক্ত হয়। লেখাটি এখানে সম্পূর্ণরূপে তুলে দেওয়া গেল : “রক্তকরবী” (কবির অভিভাষণ) আজ আপনাদের বারোয়ারী সভায় আমার “নন্দিনী"র পালা অভিনয় । প্রায় কখনো ডাক পড়ে না, এবারে কৌতুহল হয়েছে। ভয় হচ্ছে, পালা সাঙ্গ হ’লে ভিখ মিলবে না। কুত্তা লেলিয়ে দেবেন। তারা পালাটাকে ছিড়ে কুটিকুটি