পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Qbアぐ তিনি ঐ সময়ে প্রায়ই রবীন্দ্রনাথের কাছে আসতেন কাশী থেকে— তাঁর একটি স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য এবং চারিত্রিক মাধুর্য কবিকে আনন্দিত করে। প্রাসঙ্গিক বিবেচনায়, আমাকে লেখা কয়েকটি চিঠির অংশবিশেষ এখানে উদ্ধৃত করছি। শিলও থেকে ফিরে রবীন্দ্রনাথ ‘দ্বারিক"-এর দোতলার হল-ঘরে নাটকটি পড়ে শোনান আশ্রমিকদের কাছে। সেদিনকার কথা স্মরণ করে প্রমথনাথ বিশী (১৬ জুন ১৯৭৮) জানিয়েছিলেন : “পঞ্চাশ বছর আগেকার কথা ঠিক স্মরণ নেই– Foolscap খাতা কি না তাও মনে থাকা সম্ভব নয়। তবে খাতায় যদি পাত্র-পাত্রীর উল্লেখ না থাকে তবে কেমন হ’ল ? খুব সম্ভব ওটা একেবারে খসড়া—তাঁর নিজের কাজ চালাবার জন্যে। আমাদের যেটা পড়ে শুনিয়েছিলেন তাতে পাত্র-পাত্রীর উল্লেখ ছিল— তবে বর্তমান আকারে নয় ।” অমিতা ঠাকুর লিখেছিলেন (২০ জুন ১৯৭৮) : নির্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন (১৭ ডিসেম্বর ১৯৭৯) “সেই প্রথম পাঠের দিনে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য অনেকের মধ্যে আমারও হয়েছিল— তৎকালীন দ্বারিক"-এর দোতলার হল-ঘরে । তবে, আমি তখন আশ্রম বিদ্যালয়ের অন্যতম বালক ছাত্র, বয়সে নবীন।” কবি অমিয় চক্রবর্তীর পূর্বোত্ত চিঠির প্রাসঙ্গিক আরও খানিকটা অংশ : “যে সন্ধ্যায় নাটকটি তিনি জনকয়েক শ্রোতার কাছে আগাগোড়া স্বকণ্ঠে পড়ে শোনান, তার মধ্যে আমিও ছিলাম। একটি অস্বাভাবিক এবং মজার ঘটনা মনে পড়ছে- সেইদিনই যে তিনি ওটি পড়ে শোনাবেন তা আমরা জানতাম না। সারাদিন তাঁরই আপিসে কাজ করে একটু বেড়াতে বেরিয়েছি হঠাৎ শুনলাম তাঁর ভৃত্য বনমালী উচ্চৈঃস্বরে আমার নাম ধরে] ডাকছে এবং লণ্ঠন হাতে আমাকে খুঁজছে। আমি তৎক্ষণাৎ সাড়া দিয়ে শুনলাম উনি আপনাকে খুঁজছেন– তাঁর পাঠ এখন আরম্ভ হবে। দ্বিরুক্তি না করে সোজা কবির আসরে যোগ দিলাম। তাঁর কষ্ঠে সমস্ত নাটকটি শুনে চমৎকৃত হয়েছিলাম, এখনো স্পষ্ট মনে আছে, যদিও পরে তিনি বহু অদল বদল করেছিলেন ।” দেখতে পাচ্ছি, যে সান্ধ্য আসরে রবীন্দ্রনাথ ‘রক্তকরবী নাটকটির একটি খসড়া পড়ে শোনান সেখানে উপস্থিত আশ্রমিকদের মধ্যে ছিলেন প্রমথনাথ বিশী, অমিয় চক্রবর্তী, অমিতা ঠাকুর এবং নির্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। মনে হয়, দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় খসড়াটি কবি তাঁর শ্রোতাদের পড়ে শুনিয়েছিলেন। ৬ ‘রক্তকরবী'র নায়িকার নামকরণ-প্রসঙ্গ ‘রক্তকরবী'র প্রথম খসড়ায় প্রথাগতভাবে নাটকটির-পাত্র-পাত্রীর নাম ছিল না যদিও সংলাপ থেকে তাদের পরিচয় বোঝা যায়। নামের উল্লেখ না থাকলেও কিশোর ও গোকুল ছাড়া অন্য সব চরিত্রই এই খসড়ায় উপস্থিত রয়েছে। দ্বিতীয় খসড়া থেকে