পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ ゲや পাত্র-পাত্রীর নাম এসেছে– রাজা অধ্যাপক বিশু রঞ্জন ফাগুলাল চন্দ্রা গোঁসাই সর্দার পুরাণবাগীশ, সকলেরই। প্রথম খসড়ায় বিশুর পরিচয় মাতাল হিসেবে, পরে সে হয়েছে বিশু পাগল। কিন্তু বড়ো পরিবর্তনটি অন্যত্র। এতকাল যাকে আমরা নন্দিনী বলে জেনে এসেছি, প্রথম খসড়ায় তার নাম ছিল খঞ্জনী, যাকে সবাই খঞ্জন বলে ডাকে । সম্ভবত রঞ্জনের সঙ্গে মিলিয়েই খঞ্জন । চঞ্চল পাখি খঞ্জনের আচরণ কি নায়িকা খঞ্জনীর মধ্যে পাই ? না, নায়িকা খঞ্জনীর আচরণে আদৌ কোনো চণ্যলতার ছাপ নেই। বরং, সে যে সকলের আনন্দের কারণ, সৌন্দর্যের লীলায় ও ব্যক্তিত্বের মাধুর্যে তার নন্দিত রূপে সকলেই মুগ্ধ : এই ভাবটিই বিধৃত হয়েছে খঞ্জনীর ভিতর দিয়ে। সম্ভবত চরিত্রটির এই অন্তনিহিত মহিমার অনুভব সতত ধ্বনিসচেতন কবির শ্রবণেন্দ্রিয় কবিকে সরিয়ে নিয়ে গেছে এই নামকরণ থেকে । তাই, পরবর্তী খসড়ায় খঞ্জনী হয়েছে সুনন্দা, তারপরে নন্দিনী । যখন কবি তাঁর ‘মানবীর ছবিটি নামের ভিতর দিয়ে ধরতে গিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত, তখন দেখা যাচ্ছে খঞ্জনী বর্জন করে সুনন্দা লিখছেন আবার পরমুহুর্তেই সুনন্দাকে সরিয়ে দিয়ে এনেছেন নন্দিনীকে । কীভাবে নন্দিনীর নামকরণের বিবর্তন ঘটেছে তার কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরা গেল : (১) কি পাগলী ! ঐ আসচে তোমার খঞ্জন। তাহলে আজকের মত বিশুদাদাকে আর পাওয়া যাবে না। চল চন্দ্রা আমার আমরা যাই । কেন, বেয়াই, খঞ্জনকে পেলে তোমার নেশায় পর্যন্ত খেয়াল থাকে না কেন ? (প্রথম খসড়া থেকে) (২) রঞ্জন, তুমি একটা কিছু আমাকে বল, একটা তোমার শেষ কথা— যা নিয়ে আমি বাঁচতে পারি। 電 ও একটা কথা বলেচে, খঞ্জনী, আমি শুনতে পেয়েচি। এই যে আমার ধ্বজা এসেচে। ভাঙো ওটাকে, ভেঙে শতখানা কর! সেই ধূলোয় একেবারে মিলিয়ে যাক যে ধূলো থেকে কচি ঘাস বেরোয়, বনলতায় ফুল ধরে ! ... + " (প্রথম খসড়া থেকে) (৩) সুনন্দা বর্জন করে) নন্দিনী (রাজার মহলের জানলার বাহিরে) শুনতে পাচ্চ ? আমার কথা শুনতে পাচ্চ ? নেপথ্যে যখনি ডাকো, খঞ্জন বর্জন করে নন্দিন, নন্দিন বর্জন করে নন্দা, শুনতে পাই। কিন্তু বারে বারে ডেকো না, আমার সময় নেই, একটুও সময় নেই। (দ্বিতীয় খসড়া থেকে) (8) ~ নেপথ্যে [খঙ্গনী বর্জন করে নন্দিন, একথা তুমি ছাড়া আর কেউ মুখে আনতে পারত না। সবার সঙ্গে মিলে আমি ধান কাটব ?