পাতা:রক্ত-লেখা - নিত্যানন্দ কর্ম্মকার.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা সুসাহিত্যিক শ্ৰীনিত্যানন্দ কৰ্ম্মকার মহাশয় একথানি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছেন এবং আমাকে তার একটা ভূমিকা লিখে দিতে অনুরোধ করেছেন। নিজের সম্পূর্ণ অযোগ্যতা সত্ত্বেও তাই এই নিবেদন । সাহিত্য মানবচিত্তের অভিব্যক্তি। প্রত্যেক মামুষ তার ব্যক্তিত্বের গওঁী অতিক্রম করতে পারলেই তবে তার মানসক্ষেত্রে কাব্যলক্ষ্মীর আবির্ভাব হয়। কবির ব্যক্তিগত সুখদুঃখ, আশা আকাঙ্ক্ষা, আনন্দ বেদন নিয়ে তার যে ক্ষুদ্র জগতটা গড়ে ওঠে, তা কবিকে ধরে রাখতে পারেন । কবি সমগ্রতার মধ্যে যখন আপনাকে হারিয়ে ফেলেন তখন তার চিত্ত কমল শত দলে বিকশিত হয়ে সমগ্র দেশ ও জাতির মধ্যে তার সুষম, তার সুবাস, তার সৌন্দৰ্য্য ছড়িয়ে দেয়। কবি-মনের অভিব্যক্তি দেশ বা কালের সীমায় আবদ্ধ থাকে না । সে চিরন্তন । কাব্য বচনায় রসের উৎপত্তি কেমন করে হয়, কবির প্রাণের কোন নিগুঢ় নিয়মের বশে কাব্য স্বষ্টি হয়, ত। যেমন রসের ধারণ বা রসতত্ত্ব থেকে সিদ্ধাস্ত করা যায়ন, তেমনি কবির যে প্রাণ ধৰ্ম্ম সৃষ্টি করে, সেই প্রাণধৰ্ম্মের লক্ষণগুলির ওপরে রসতত্ত্বের প্রতিষ্ঠা হয়না। ভাব কবির প্রাণে সঞ্চারিত হলে তবেই রূপময় হয়ে ওঠে । এই প্রাণই কবিধৰ্ম্মের তথা জীবনধৰ্ম্মের অধিষ্ঠাত্রী দেবতা। যেখানে যত কিছু সাহিত্যেব স্বষ্টি হয়েছে, তার রস যতই গভীর, উদার ও সাৰ্ব্বজনীন হোকৃ— যে রূপ হতে সেই রসের উৎপত্তি হয়, তা কবির প্রাণেরই রূপ, অর্থাৎ তাতে যে বর্ণ আছে, তা ব্যক্তি বিশেমের হৃদয় রক্তের আভা, তাতে আলোছায়ার যে রেখাপাত হয় তা ব্যক্তি বিশেষের আনন্দবেদনার হাসি ও অশ্রুতে জড়িত । যে রূপ রস আনন্দ পিপাসা কবি-প্রকৃতির লক্ষণ, যার বশে কবির ভাব রূপময় হয়ে ওঠে, নির্বিশেষ বিশেষে পরিণত হয়—কবিব সেই কবিধৰ্ম্ম, সেই প্রাণ সাহিত্যের প্রাণ সষ্টি করে । আর সৃষ্টি সুষমার যে সুরসঙ্গতি তা কবিচিত্তে নানারূপে সঞ্চারিত হয় । সৃষ্টির যাৰতীয় রাপের যে ৰাষ্ময়ী সুষম, তাই কাব্যকলা। ধ্বনি ও অর্থ কবি এই