পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

brર রবীন্দ্র-রচনাৰলী তুলনা করিয়া তাহাকে তাহার যথাযোগ্য আসন দেওয়া, একটা স্বন্দর বস্তু হইতে দশটা স্বন্দর বস্তুর কথা মনে পড়া, অবস্থা-বিভেদে একটি স্বন্দর বস্তুর সৌন্দৰ্য্য-বিভেদ কল্পনা করিতে পারা কি সকলের সাধ্য ? সকল চক্ষুই কি শরীরী পদার্থের মধ্যে অশরীরী কি-একটি দেখিতে পায় ? অল্পই হউক আর অধিক হউক কল্পনা ত সকলেরই আছে। উন্মাদগ্ৰস্ত ব্যক্তির অপেক্ষ কল্পনা কাহার আছে ? কল্পনা প্রবল হইলেই কবি হয় না । সুমাজ্জিত, স্বশিক্ষিত ও উচ্চ শ্রেণীর কল্পনা থাকা আবশ্ব্যক । কল্পনাকে যথাপথে নিয়োগ করিবার নিমিত্ত বুদ্ধি ও রুচি থাকা আবশ্বক করে। পূর্ণচন্দ্র যে হাসে, বা জ্যোৎস্না যে ঘুমায়, এ কয়জন বালকের কল্পনায় উদিত হয় ? একজন বালক যদি অসাধারণ কাল্পনিক হয়, তবে পূর্ণচন্দ্রকে একটি আস্ত লুচি বা অৰ্দ্ধচন্দ্রকে একটি ক্ষীরপুলি মনে করিতে পারে। তাহাদের কল্পনা সুসংলগ্ন নহে ; কাহার সহিত কাহার যোগ হইতে পারে, কোন কোন দ্রব্যকে পাশাপাশি বসাইলে পরস্পর পরস্পরের আলোকে অধিকতর পরিস্ফুট হইতে পারে, কোন দ্রব্যকে কি ভাবে দেখিলে তাহার মৰ্ম্ম, তাহার সৌন্দৰ্য্য চক্ষে বিকাশ পায়, এ সকল জানা অনেক শিক্ষার কাজ। একটি দ্রব্য অনেক ভাবে দেখা যাইতে পারে। বৈজ্ঞানিকেরা এক ভাবে জগং দেখেন, দার্শনিকেরা এক ভাবে দেখেন ও কবিরা অার এক ভাবে দেখেন । তিন জনে তিন প্রকার পদ্ধতিতে একই বস্তু দেখিতে পারেন । তুমি কি বল, উহার মধ্যে দুই প্রকার পদ্ধতি আয়ত্ত করিতে শিক্ষার আবশ্যক করে, আর তৃতীয়টিতে করে না ? শুদ্ধ করে না তাহাই নয়, শিক্ষাতেই তাহার বিনাশ! কোন দ্রব্য কোন শ্রেণীর, কিসের সহিত তাহার ঐক্য ও কিসের সহিত তাহার অনৈক্য, তাহা সুহ্মাকুসুক্ষরূপে নির্ণয় করা দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক ও কবি তিন জনেরই কাজ। তবে একটা দ্রব্যের তিনটি দিক আছে, তিন জন তিন বিভিন্ন দিকের ভার লইয়াছেন । তিন জনের মধ্যে এই মাত্র প্রভেদ, আর কিছু প্রভেদ আছে কি ? অনেক ভাল ভাল কবি যে ভাবের পাশ্বে যে ভাব বসানো উচিত, স্থানে স্থানে তাহার ব্যতিক্রম করিয়া শিক্ষার অসম্পূর্ণতা প্রকাশ *folson 1 Marlow: “Come live with me and be my love” at Næ সুবিখ্যাত কবিতাতে ইহা লক্ষিত হয় । “হ’বি কি আমার প্রিয়া, রবি মোর সাথে ? অরণ্য, প্রাস্তর, নদী, পৰ্ব্বত গুহাতে যত কিছু, প্রিয়তমে, মুখ পাওয়া যায়, দু-জনে মিলিয়া তাহ ভোগ করি আয় !