পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>R রবীন্দ্র-রচনাবলী একেবারেই তাহার ভিতরকার ভাব তাহার হৃদয়পূর্ণ মাধুরী দেখিতে পাই । এই সৌন্দৰ্য্য এই স্বাধীনতা সকল দেশের লোকেই সমান উপভোগ করিতে পারেন । ইহার জন্ত ভূগোল বিবরণ পড়িয়া রেলোয়ের টিকিট কিনিয়া দূরদূরান্তরে যাইবার প্রয়োজন নাই । এক কাঠা জমি। একদল লোক আছেন তাহারা যেখানে যতই পুরাতন হইতে থাকেন সেইখানে ততই অনুরাগস্থত্রে বদ্ধ হইতে থাকেন। আর একদল লোক আছেন, তাহাদিগকে অভ্যাস-স্থত্রে কিছুতেই বাধিতে পারে না, দশ বৎসর যেখানে আছেন সেও তাহার পক্ষে যেমন, আর একদিন যেখানে আছেন সেও তাহার পক্ষে তেমনি । লোকে হয়ত বলিবে তিনিই যথার্থ দূরদর্শী, অপক্ষপাতী, কেবল মাত্র সামান্ত অভ্যাসের দরুন তাহার নিকট কোন জিনিষের একটা মিথ্যা বিশেষত্ব প্রতীতি হয় না। বিশ্বজনীনতা র্তাহাতেই সম্ভবে । ঠিক উণ্টো কথা । বিশ্বজনীনতা তাহাতেই সম্ভবে না। বিশ্বের প্রত্যেক বিঘা প্রত্যেক কাঠাতেই বিশ্ব বর্তমান। একদিনে তাহা আয়ত্ত হয় না। প্রত্যহ অধিকার বাড়িতে থাকে। যিনি দশ বৎসরে এক স্থানের কিছুই অধিকার করিতে পারিলেন না তিনি বিশ্বকে অধিকার করিবেন কি করিয়া ! বিশ্ব সৰ্ব্বত্রই অসীম গভীর এবং অসীম প্রশস্ত । অতএব বিশ্বের এক কাঠা জমিকে যথার্থ ভালবাসিতে গেলে বিশ্ব-জনীনতা থাকা চাই । জগৎ মিথ্যা। র্যাহারা বলেন জগৎ মিথ্যা, তাহাদের কথা এক হিসাবে সত্য এক হিসাবে সত্য নয়। বাহির হইতে জগৎকে যেরূপ দেখা যায় তাহা মিথ্যা । তাহার উপরে ঠিক বিশ্বাস স্থাপন করা যায় না । ঈথর কঁাপিতেছে, আমি দেখিতেছি আলো ; বাতাসে তরঙ্গ উঠিতেছে, আমি শুনিতেছি শব্দ ; ব্যবচ্ছেদবিশিষ্ট অতি সূক্ষ্মতম পরমাণুর মধ্যে আকর্ষণ বিকর্ষণ চলিতেছে, আমি দেখিতেছি বৃহৎ দৃঢ় ব্যবচ্ছেদহীন বস্তু । বস্তুবিশেষ কেনই যে বস্তুবিশেষ রূপে প্রতিভাত হয় আর-কিছু রূপে হয় না, তাহার কোন অর্থ পাওয়া যায় না । আশ্চৰ্য্য কিছুই নাই, আমাদের নিকটে যাহা বস্তুরূপে প্রতিভাত হইতেছে,