পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ᏜᎲ রবীন্দ্র-রচনাবলী যেমন, জড়ই বল আর প্রাণীই বল সকলেরই মধ্যে এক মহা চৈতন্তের নিয়ম কাৰ্য্য করিতেছে, যাহাতে করিয়া উত্তরোত্তর প্রাণ অভিব্যক্ত হইয়া উঠিতেছে, তেমনি পাপীই বল আর সাধুই বল সকলেরই মধ্যে অসীম পুণ্যের এক আদর্শ বর্তমান থাকিয়া কাৰ্য্য করিতেছে । স্বর্গের পাথেয় সকলেরই কাছে রহিয়াছে, কেহই তাহা হইতে বঞ্চিত নহে। তবে কেহ বা সোজা রাজপথে চলিয়াছে, কেহ বা নিৰ্ব্ব দ্বিতাবশতঃই হউক, কৌতুহলবশতঃই হউক, একবার মোড় ফিরিয়া গলির মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে, অবশেষে বহুক্ষণ ধরিয়া এ-গলি ও-গলি সে-গলি করিয়া পুনশ্চ সেই রাজপথে বাহির হইয়৷ পড়িতেছে, মাঝের হইতে পথ ও পথের কষ্ট বিস্তর বাড়িয়া যাইতেছে। কিন্তু জগতের সমুদয় পথই একই দিকে চলিয়াছে, তবে কোনটার বা ঘোর বেশী, কোনটার বা ঘোর কম এই যা তফাৎ । পাপ পুণ্য। অতএব, পাপ বলিয়া যে একটা স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে তাহা নহে। পাপীর যে ধাৰ্ম্মিকের চেয়ে বেশী কিছু আছে তাহা নহে, ধাৰ্ম্মিকের যতটা আছে পাপীর ততটা নাই এই পৰ্য্যন্ত । পাপীর ধৰ্ম্মবুদ্ধি অচেতন অপরিণত । পাপ অভাব, পাপ মিথ্যা, পাপ মৃত্যু ৷ অতএব আর সকলই থাকিবে কেবল পাপ থাকিবে না,—যেমন অন্ধকারঈথর কম্পন-প্রভাবে উত্তরোত্তর আলোক হইয়া উঠে, তেমনি পাপ চৈতন্যের প্রভাবে উত্তরোত্তর পুণ্যে পরিণত হইতে থাকিবে । চেতন । যাহা ধ্রুব তাহাই ধৰ্ম্ম । এই ধ্রুবের আশ্রয়ে আছে বলিয়াই জগতের মৃত্যুভয় নাই। একটি ধ্রুবসুত্রে এই সমস্ত বিশ্বচরাচর মালার মতন গাথা রহিয়াছে। ক্ষুদ্রতম ইইতে বৃহত্তম কিছুই সেই সুত্র হইতে বিচ্ছিন্ন নহে, অতএব সকলেই ধর্মের বাধনে বাধা । তবে, সেই বন্ধনসম্বন্ধে কেহ বা সচেতন কেহ বা অচেতন। অচেতনের বন্ধনই দাসত্ব, আর সচেতনের বন্ধনই প্রেম । । h