পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२br * / রবীন্দ্র-রচনাবলী মনের মিল । জগতের সাধারণের সহিত সৌন্দর্য্যের আশ্চৰ্য্য ঐক্য আছে । জগতের সর্বত্রই তাহার তুলনা তাহার দোসর মেলে। এই জন্য সৌন্দৰ্য্যকে সকলের ভাল লাগে। সৌন্দৰ্য্য যদি একেবারেই নূতন হইত, খাপছাড়া হইত, হঠাৎ-বাবুর মত একটা কিস্তৃত পদার্থ হইত, তাহা হইলে কি তাহাকে আর কাহারে ভাল লাগিত ? আমাদের মনের মধ্যেই এমন একটা জিনিষ আছে, সৌন্দর্য্যের সহিত যাহার অত্যন্ত ঐক্য হয়। এজন্য সৌন্দৰ্য্যকে দেখিবামাত্র তৎক্ষণাৎ “আমার মিত্ৰ” বলিয়া মনে হয়। জগতে আমরা “সদৃশকে” খুজিয়া বেড়াই। যথার্থ সদৃশকে দেখিলেই হৃদয় অগ্রসর হইয়া তাহাকে আলিঙ্গন করিয়া ডাকিয়া আনে, কিন্তু সৌন্দর্য্যের মধ্যে যেমন আমাদের সাদৃত দেখিতে পাই, এমন আর কোথায় ? সৌন্দৰ্য্যকে দেখিলে তাহাকে আমাদের “মনের মত” বলিয়া মনে হয় কেন ? সে-ই আমাদের মনের সঙ্গে ঠিক মেলে, কদৰ্য্যতার সঙ্গে আমাদের মনের মিল হয় না। আমরা সকলেই যদি কিছু না কিছু সুন্দর হইতাম, তাহা হইলে সুন্দর ভাল বাসিতাম না ! উপযোগিতা । যাহা আমাদের উপকারী ও উপযোগী, তাহাই কালক্রমে অভ্যাসবশতঃ আমাদের চক্ষে সুন্দর বলিয়া প্রতীত হয় ও বংশপরম্পরায় সেই প্রতীতি প্রবাহিত ও পরিপুষ্ট হইতে থাকে, এরূপ কথা কেহ কেহ বলিয়া থাকেন। তাহা যদি সত্য হইত তাহা হইলে লোকে অবসর পাইলে ফুলের বাগানে বেড়াইতে না গিয়া ময়রার দোকানে বেড়াইতে যাইত, ঘরের দেয়ালে লুচি টাঙ্গাইয়া রাখিত ও ফুলদানীর পরিবর্তে সন্দেশের হঁাড়ি টেবিলের উপর বিরাজ করিত ! আমরা সুন্দর। প্রকৃত কথা এই যে, আমরা বাহিরে যেমনই হই না কেন, আমরা বাস্তবিকই স্বন্দর । সেই জন্য সৌন্দর্য্যের সহিতই আমাদের যথার্থ ঐক্য দেখিতে পাই । এই সৌন্দৰ্য্য-চেতনা সকলের কিছু সমান নয়। যাহার হৃদয়ে যত সৌন্দৰ্য্য বিরাজ