পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

WOo ή রবীন্দ্র-রচনাবলী সে জাতির মুখশ্ৰী সুন্দর হইতে পারে না । দেখা যাইতেছে, দয়ায় স্বন্দর করে, প্রেমে স্বন্দর করে, হিংসায় নিষ্ঠুরতায় সৌন্দর্য্যের ব্যাঘাত জন্মায় । জগতের অনুকূলতাচরণ করিলে স্বন্দর হইয়া উঠি ও প্রতিকূলতা করিলে জগৎ আমাদের গালে কদৰ্য্যতার চুনকালি মাখাইয় তাহার রাজপথে ছাড়িয়া দেয়, আমাদিগকে কেহ সমাদর করিয়া আশ্ৰয় দেয় না । শাস্তি । এ শাস্তি বড় সামান্য নয়। আমাদের নিজের মধ্যে সৌন্দর্য্যের নূ্যনত থাকিলে, আমরা জগতের সৌন্দৰ্য্য-রাজ্যে প্রবেশাধিকার পাই না, ধরণীর ধুলা-কাদার মধ্যে লুটাইতে থাকি। শব্দ শুনি গান শুনি না, চলাফিরা দেখিতে পাই নৃত্য দেখিতে পাই না, আহার করিয়া পেট ভরাই কিন্তু সুস্বাদ কাহাকে বলে জানি না । জগতের যে অংশে কারাগার সেইখানে গৰ্ত্ত খুড়িয়া অত্যন্ত নিরাপদে বৈষয়িক কেঁচো হইয়া বুড়া বয়স পর্য্যন্ত কাটাইয়া দিই, মৃত্তিকার তলবাসী চক্ষুবিহীন কুমিদের সহিত কুটুম্বিতা করি, ও তাহাদের সহিত জড়িত বিজড়িত হইয়া স্ত,পাকারে নিদ্রা দিই ! উদ্ধার। এই কুমিরাজ্য হইতে উদ্ধার পাইয়া আমরা সূৰ্য্যালোকে আসিতে চাই । কে আনিবে ? সৌন্দর্য্য স্বয়ং। কারণ, অশরীরী প্রেম সৌন্দর্য্যে শরীর ধারণ করিয়াছে। প্রেম যেখানে ভাব সৌন্দর্য্য সেখানে তাহার অক্ষর, প্রেম যেখানে হৃদয় সৌন্দৰ্য্য সেখানে গান, প্রেম যেখানে প্রাণ সৌন্দৰ্য্য সেখানে শরীর, এই জন্য সৌন্দর্য্যে প্রেম জাগায়, এবং প্রেমে সৌন্দৰ্য্য জাগাইয়া তুলে । কবির কাজ । কবিদের কি কাজ, এইবার দেখা যাইতেছে। সে আর কিছু নয়, আমাদের মনে সৌন্দর্য্য উদ্রেক করিয়া দেওয়া । উপদেশ দিয়া তত্ত্বনির্ণয় করিয়া প্রকৃতিকে মৃতদেহের মত কাটাকুটি করিয়া এ উদ্দেশু সাধন করা যায় না । স্বন্দরই সৌন্দৰ্য্য উদ্রেক করিতে পারে। বৈষয়িকেরা বলেন ইহাতে লাভটা কি ? কেবলমাত্র একটি