পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৫৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুবাদ-চর্চা (t)న ର ৩১এ অক্টোবরে সমাপিত সপ্তাহে অল্পকয়েক স্থানে লঘুবৃষ্টিপাত হইয়াছে। সমস্ত প্রদেশে আরও অধিক বৃষ্টির আশু প্রয়োজন। কোনো কোনো জিলায় আমনধান শুকাইতেছে বলিয়া প্রতিবেদন করা হইয়াছে। উত্তর এবং পশ্চিম বাংলায় শস্তের ভাবী অবস্থা সাধারণত আশাজনক নহে । অন্যত্র ভাবী অবস্থা মাঝামাঝি রকম । রবিশস্যের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা চলিতেছে । বৃষ্টির অভাবে বীজবপনের ব্যাঘাত ঘটিতেছে। এই প্রদেশে মোট চালের গড়মূল্য পূৰ্ব্বসপ্তাহের তুলনায় প্রায় শতকরা হারে দুই মাত্র বাড়িয়াছে। So আমাদের অরণ্যের এবং ফলের বাগানের গাছসকল তাহাদের বৃদ্ধির প্রত্যেক অবস্থায় কীটশক্রদলের আক্রমণের বিষয় ; এই কীটশত্ৰুগণ বাধাপ্রাপ্ত না হইলে শীঘ্রই বৃক্ষসকলকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করিত । আমাদের আরণ্যবৃক্ষ এবং ছায়াতরুগুলির বিনাশে আমাদের যে কী হইত, তাহ বর্ণনা করার চেয়ে কল্পনা করা সহজ । কাঠ আমাদের এত প্রকার সামগ্রীতে লাগে যে, ইহাকে বাদ দিয়া সভ্য মাহুষের কথা চিন্তা করা কঠিন। এদিকে আমাদের ফলবাগানের ফলসকল ও যার-পর-নাই প্রয়োজনীয়। সৌভাগ্যক্রমে বৃক্ষদের কীটশক্ৰ সকলেরও নিজেদের নিত্য-নিযুক্ত শক্ৰ যে নাই তাহ নহে ; এই শক্রদের মধ্যে অনেক জাতীয় পক্ষী আছে, যাহাদের অস্ত্রসজ্জা এবং অভ্যাসসকল কীট-আক্রমণ-ব্যাপারে তাহাদিগকে বিশেষরূপে যোগ্যতা দান করে, এবং তাহদের সমস্ত জীবন এই কীটের অক্ষুধাবনে ব্যয়িত হয় । > S আলেকজাণ্ডার দি গ্রেটু এবং প্রাচীনকালের পূৰ্ব্বদেশীয় অনেক রাজাও সিংহ পুষিতেন। ঐ সকল পোষা সিংহ তাহাদের প্রাসাদের মধ্যে স্বাধীনভাবে ঘুরিয়া বেড়াইত । বর্তমানকাল পর্য্যন্ত আবিসিনিয়ার রাজগণ ঐ রীতি রক্ষা করিয়া আসিতেছেন এবং আলজিরিয়ার কোনো কোনো অংশে এখনো সিংহদিগকে অন্ধ করিয়া ও পোষ মানাইয়া ভূতছাড়ানোর কাজে লাগানো হইয়া থাকে। মধ্যযুগের শেষ-অংশে মিলানে ও ইটালির অন্যান্য নগরে সিংহ এবং চিতাবাঘকে অপরাধী ব্যক্তির প্রাণসংহারের কাৰ্য্যে ব্যবহার করা হইত।