পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৫৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জম্বুবাদ-চর্চ। 49% গলার মধ্য দিয়া অদৃশু হইল। অবশ্ব দ্বিতীয় অৰ্দ্ধাংশও সত্বর প্রথমকে অনুসরণ করিয়া হাঙ্গরের কণ্ঠ দিয়া নামিয়া গেল—এবং তখন শেষোক্ত প্রাণীও পুনরায় আপনাকে প্রচ্ছন্ন করিল। আমি লক্ষ্য করিলাম, তিনবার এই হাঙ্গর এইরূপ কৌশলে কৃতকাৰ্য্য হইল ; কিন্তু একমাত্র এই উপলক্ষ্যেই আমি দেখিয়াছিলাম যে, একটি শুশুক চতুরতায় একটি হাঙ্গর কর্তৃক পরাভূত হইয়াছে। Y S > মধ্য যুগে লোকের এইরূপ বিশ্বাস ছিল যে, এক সহস্র খৃষ্টীয় শকে জগতের নিশ্চিত অবসান ঘটিবে । খৃষ্টান সমাজ এই বিশ্বাস লইয়াই জীবননিৰ্বাহ করিত এবং যে ব্যক্তি ইহাতে সন্দেহ করিত, সে শাস্ত্রদ্রোহী বলিয়া গণ্য হইত। মধ্য যুগের অধিকাংশ আইন ও রাজদত্ত দলিল “জগতের আসন্ন দিনান্ত কালে” এই বাক্যের দ্বারা আরম্ভ করা হইত। দশম শতাব্দীর সমাপ্তি যখন নিকটতর হইয়া আসিল, তখন ভয়ের পরিমাণও বাড়িয়া উঠিল। যুরোপ যেন তখন তাহার শেষ উইল লিখিয়া সারিল এবং চার্চকে যাহা দান করা হইল তাহার অধিকাংশের তারিখ সেই যুগ হইতেই মুরু । লোকের তাহাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করিতে ইচ্ছা করিল। তাহারা চার্চকে আপন সম্পত্তি দিয়া ফেলিল, বস্তুত সে সম্পত্তিতে তাহদের আর অধিক প্রয়োজন থাকার কথা ছিল না ; এবং সেই একই কারণে সরকারী সম্পত্তির অধিকাংশই পুরোহিতসম্প্রদায়ের অধিকারে আসিল । কিন্তু এক হাজার শালও কাটিয়া গেল এবং আমাদের ভূমণ্ডল তাহার কক্ষের চতুর্দিকে আবৰ্ত্তন বন্ধ করিল না। তখন হইতে জগতের অস্ত-সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী উচ্চারণ করিতে অল্প লোকই সাহস করিয়াছে । N N R পুরাকালে লোকেরা ধূমকেতুর সহিত সংঘাতকে ভয় করিত, কিন্তু যখন হইতে এই নভশ্চর পদার্থসকল আমাদের নিকট অধিকতর সুবিদিত হইয়াছে, তখন তাহারা আর কাহাকেও ভয় দেখাইতে পারে না। ধূমকেতু কোনো প্রাণীর ক্ষতি করিয়াছে, এমন একটি ঘটনারও উল্লেখ করা যাইতে পারে না । তাহাদের পুচ্ছ এত সুক্ষ্ম গ্যাসে নিৰ্ম্মিত যে, বহু সহস্র মাইল পুরু হইলেও তাহা এক গ্লাস জলের মতোই স্বচ্ছ । এরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ আছে যে, এই গ্যাস বেনজইন অথবা পেট্রোলিয়ম বাম্পের দ্বারা গঠিত, কিন্তু ধূমকেতুর যে পুচ্ছ বিমানপথচারী দুই জ্যোতিষ্কের মধ্যবর্তী আকাশের সেতু রচনা করিতে পারে, তাহার সমস্ত উপাদান সম্ভবত কয়েকটি মাত্র

  • >