পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৫৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ぐや8 রবীন্দ্র-রচনাবলী গরম কাফি আনিয়া দিল। বালক কাফির মূল্য দিতে চাওয়ায় স্ত্রীলোকটি হাসিয়া বলিল, “যুদ্ধের পরে, যুদ্ধের পরে।” >>br বিধবা ছেলেপিলের মায়েরা অথবা যে সকল ফরাসী এক্ষণে যুদ্ধক্ষেত্রে আছেন তাহাদের স্ত্রীরাই এখানকার মতো জায়গায় অধিকাংশ গৃহস্থালীর কর্তৃপক্ষ। উহার গৃহত্যাগ করিতে ভয় পায়, অথবা অন্যত্র কোথায় যাইবে জানে না এবং উহার ইংরেজ সৈনিকদের কাছে স্বল্প কয়েক প্রকারের পণ্যদ্রব্য মাত্র আর মাটির তলার ভাণ্ডার-ঘরে ও গৰ্ত্ত সকলের মধ্যে যে সব জিনিষের প্রয়োজনের অন্ত নাই, সেই চকোলেট, কমলালেবু, আপেল, শার্ডিন মাছ, মোমবাতি বিক্রয় করিয়া দিনপাত করিতে পারে। অন্য স্ত্রীলোকেরা সৈনিকদের কাপড় ধোলাই করিতেছে কিংবা তাহারা জানালায় “বিলাতী বিয়ার” লেখা একখানি কার্ড ঝোলানো ছোটো ছোটো বেসরকারী মদ্যশালা খুলিয়াছে, সেখানে একটি ঘরের চতুদিকের দেওয়ালের গায়ে টেবিল সাজানো। ’ > > 。 আমি পীড়িত ছিলাম, অত্যন্ত পীড়িত, এত বেশি যে আমার কলিকাতা-বাসের সমস্ত শেষ মাসটি আমি শয্যাগত ছিলাম এবং লেখা, এমন কি চিন্তা করাও আমার পক্ষে নিষিদ্ধ ছিল । খুব দুৰ্ব্বল অবস্থাতেই আমাকে আমার ঘর হইতে জাহাজে লইয়া যাওয়া হইয়াছিল ; কিন্তু আনন্দের সহিত জানাইতেছি যে, এখনি আমি প্রায় রোগমুক্ত হইয়াছি। সুমাত্রা দ্বীপের দর্শনলাভ এবং মলয় দ্বীপপুঞ্জের স্বাস্থ্যদায়ক বায়ুপ্রবাহ আশ্চৰ্য্য পরিবর্তন সাধন করিয়াছে। এবং যদিও আমি এখনো দুৰ্ব্বল বোধ করিয়া থাকি, তবুও মোটের উপরে বলিতে পারি যে, আমি সুস্থ অবস্থায় এবং ক্ষুৰ্ত্তিতেই আছি। বাট দেশের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত টাম্পামুলী আমি সবেমাত্র ছাড়িয়া আসিয়াছি। বাটারা সুমাত্রার একটি সুবিস্তীর্ণ জনবহুল জাতি ; দ্বীপটির যে অংশ চীন ও মেনাঙ্গকাবুর মধ্যে সমুদ্রের উভয় তীর পর্য্যস্ত ব্যাপ্ত, উহারা তাহারই সমগ্রভাগ অধিকার করিয়া বাস করে । তীর প্রদেশটি বিরলবসতি কিন্তু অভ্যন্তরভাগে অধিবাসিগণ অরণ্যের পত্রপুঞ্জের ন্যায় নিবিড় বলিয়া কথিত আছে। সমস্ত জাতির জনসংখ্যা সম্ভবত দশ লক্ষ হইতে বিশ লক্ষের মধ্যে হইবে ।