পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৬০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুবাদ-চর্চা Qbr〉。 প্রথম উপায় তাহার যে পীড়া আছে সেই জ্ঞান ; তাহার পরে তাহার রোগের প্রকৃতি, কিরূপে তাহার প্রতিকার হইতে পারে এবং কিরূপে রোগের পুনরাবৰ্ত্তন নিষেধ করা যায়, তৎসম্বন্ধে জ্ঞান । × &) v5 তোমাকে আমার লিখিবার উদ্দেশ্য এই যে, বাংলা দেশের পক্ষে ষে-জ্ঞানের এত বেশি প্রয়োজন যাহাতে সেই জ্ঞান বিস্তার করিবার শ্রেষ্ঠ উপায়-সম্বন্ধে স্ত্যানিটারী বোর্ডের উপদেশ সংগ্রহ করা হয় । এই ব্যাধি সম্বন্ধে আমাদের বর্তমান অভিজ্ঞতা হইতে দুইটি কথা সুস্পষ্ট প্রকাশিত হইয়াছে, প্রথম, যে, ইহা অত্যন্ত দূরবিস্তৃত, এবং দ্বিতীয়, যে, ইহা সহজেই সারিয়া যায়। কিন্তু যদি বা এই পরাশিত কীট মতুন্যের দেহতন্ত্র হইতে বিনাক্লেশে তাড়িত হয়, তথাপি ইহার পুনঃসংক্রমণ নিষেধ করা এক সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ব্যাপার। এবং সেই পুনঃসংক্রমণ হইতে নিরাপদ হওয়া কেবলমাত্র জনগণের স্বাস্থ্যপালন-সম্বন্ধীয় অভ্যাস সকলের পরিবর্তন দ্বারাই ঘটিতে পারে। অতএব এইরূপ যেন বোধ হইতেছে যে, এই পরাশিত কীটের সম্পূর্ণ উচ্ছেদ-সাধনের চেষ্টার সময় এখনো আসে নাই । কিন্তু যাবৎ বৰ্ত্তমানে অঙ্কুশ-কৃমির বিরুদ্ধে নিঃশেষকারী যুদ্ধ চালনা করা সাধ্য না হয়, তাবৎ আমার এই বোধ হয় যে, সংগ্রামের একটা প্রথম উপক্রম হাতে লওয়া বেশ চলে । Y V) 8 উপসংহারে আমি বলি যে এক্ষণে এ সম্বন্ধে আমাদের যতটা জ্ঞান আছে, তাহাতে নিম্নলিখিত প্রতিজ্ঞাগুলিকে স্থাপিত করা আমাদের পক্ষে অন্যায় নহে যে,— (১) বাংলার জনসংখ্যার বৃহদংশ, সম্ভবতঃ শতকরা আশি ভাগ, যাহাতে মোটের উপরে প্রায় তিন কোটি ষাট লক্ষ লোক বুঝায়, এই অঙ্কুশ-কৃমির দ্বারা আক্রান্ত । (২) এমন কি মৃদুসংক্রমণেও জীবনীশক্তির খৰ্ব্বতা, রক্তহীনতা, জড়তা প্রভৃতি মন্দ ফলের জন্য ইহা দায়ী ; (৩) অল্পব্যয়ে এই ব্যাধির প্রতিকার হইতে পারে ; কিন্তু (৪) দূষিত ভূমিতলকে রোগ-সংক্রমণ হইতে মুক্ত করিলে তবে ইহাকে নিরস্ত করা এবং তদনুসারে ধবংস করা যাইতে পারে, এবং (৫) এই রোগের কারণ ও প্রকৃতি-সম্বন্ধীয় জ্ঞানের বিস্তৃত প্রচার এবং তৎপশ্চাতে জনগণের স্বাস্থ্যরক্ষা-সম্বন্ধীয় অভ্যাস সকলের পরিবর্তনের দ্বারাই ইহা সম্ভাবিত হইতে পারে।