পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৬৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহজ পাঠ ఆ లీన 2=ttحه etمحیخ=خچه গুপ্তিপাড়ার বিশ্বস্তুরবাবু পালকি চড়ে চলেছেন সপ্তগ্রামে। ফাল্গুন মাস। কিন্তু এখনো খুব ঠাণ্ডা। কিছু আগে প্রায় সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি হয়ে গেছে। বিশ্বস্তুরবাবুর গায়ে এক মোট কম্বল। পালকির সঙ্গে চলেছে তার শস্তু চাকর, হাতে এক লম্ব লাঠি । পালকির ছাদে ওষুধের বাক্স, দড়ি দিয়ে বাধা । শস্তুর গায়ে অদ্ভুত জোর । একবার কুম্ভীরার জঙ্গলে তাকে ভল্লুকে ধরেছিল। সঙ্গে বন্দুক ছিল না। শুদ্ধ কেবল লাঠি নিয়ে ভল্লুকের সঙ্গে তার যুদ্ধ হোলো। শস্তুর হাতের লাঠি থেয়ে ভল্লুকের মেরুদণ্ড গেল ভেঙে। আর তার উত্থানশক্তি রইল না। আর একবার শম্ভু বিশ্বম্ভরবাবুর সঙ্গে গিয়েছিল স্বর্ণগঞ্জে। সেখানে পদ্মানদীর চরে রান্না চড়াতে হবে । তখন গ্রীষ্মকালের মধ্যাহ্ন। পদ্মার ধারে ছোটো ছোটো ঝাউগাছের জঙ্গল । উনান ধরানো চাই। দা নিয়ে শম্ভু ঝাউডাল কেটে আঁটি বাধল। অসহ রৌদ্র । বড়ো তৃষ্ণা পেয়েছে। নদীতে শস্তু জল খেতে গেল। এমন সময় দেখলে, একটা বাছুরকে ধরেছে কুমীরে। শম্ভু এক লম্ফে জলে পড়ে কুমীরের পিঠে চড়ে বসল। দা দিয়ে তার গলায় পোচ দিতে লাগল। জল লাল হয়ে উঠল রক্তে। কুমীর যন্ত্রণায় বাছুরকে দিল ছেড়ে । শস্তু সাতার দিয়ে ডাঙায় উঠে এল। বিশ্বম্ভরবাৰু ডাক্তার। রোগী দেখতে চলেছেন বহুদূরে । সেখানে ইস্টিমার ঘাটের ইস্টেশন মাস্টার মধু বিশ্বাস, তার ছোটাে ছেলের অম্লশূল, বড়ো কষ্ট পাচ্ছে। বিষ্ণুপুরের পশ্চিম ধারের মাঠ প্রকাও । সেখানে যখন পালকি এল তখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। রাখাল গোরু নিয়ে চলেছে গোষ্ঠে ফিরে । বিশ্বস্তুরবাবু তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ওহে বাপু, সপ্তগ্রাম কত দূরে বলতে পারে।” রাখাল বললে, “আজ্ঞে, সে তো সাত ক্রোশ হবে । আজ সেখানে যাবেন না । পথে ভীষ্মহাটের মাঠ, তা’র কাছে শ্মশান । সেখানে ডাকাতের ভয় ।” ডাক্তার বললেন, “বাবা, রোগী কষ্ট পাচ্ছে, আমাকে যেতেই হবে।” তিল্পনি খালের ধারে যখন পালকি এল, রাত্রি তখন দশটা। বাধন আলগা হয়ে পালকির ছাদ থেকে ডাক্তারের বাক্সটা গেল পড়ে। ক্যাস্টরঅয়েলের শিশি ভেঙে চূৰ্ণ হয়ে গেল। বাক্সটা তো ফের শক্ত ক’রে বাধলে । কিন্তু আবার বিপদ। খাল পেরিয়ে আন্দাজ দু-ক্রোশ পথ গেছে এমন সময় মড়মড় ক’রে ডাণ্ড গেল ভেঙে, পালকিটা পড়ল মাটিতে। পালকি হালকা কাঠের তৈরি ; বিশ্বম্ভরবাবুর দেহটি हूल ।