পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৭০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী سنگرو& চরম আত্মনিবেদনের সংকল্প, তৃতীয় মন্দিরে রঘুপতির অপেক্ষা, চতুর্থ জয়সিংহের আত্মহনন । অণহারের অভ্যাস বাংলাদেশের আহার অত্যন্ত অপথ্য, একথা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণ হয়ে গেছে । অথচ ভোজনে আমাদের রুচি এতই অত্যন্ত সংস্কারগত যে স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ্য রেখে তার পরিবর্তন দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। বিষয়টার গুরুত্ব ব্যক্তিগত ভালো লাগা মন্দ লাগা নিয়ে নয় এই কথা মনে রেখে সমস্ত বাংলাদেশের কল্যাণের প্রতি লক্ষ্য রেখে আহার সম্বন্ধে আমাদের রুচি ও অভ্যাসের পরিবর্তন করাই চাই—এ সম্বন্ধে আলোচনা করে । দান প্রতিদান এই গল্পে রাধামুকুন্দের যে ব্যবহার বর্ণিত হয়েছে তাকে নিন্দ করা যায় কি না এবং যদি করা যায় তবে তা কেন নিন্দনীয় বুঝিয়ে বলে । বলাই গাছপালার উপরে বলাইয়ের ভালোবাসা অসামান্ত । তাদের প্রাণের নিগৃঢ় আনন্দ ও বেদন ও যেন আপন ক’রে বুঝতে পারত। গল্পের আরম্ভ অংশে তার যে বর্ণনা আছে সেটা ভালো ক’রে প’ড়ে বোঝবার চেষ্টা করে । গাছপালার সঙ্গে ওর প্রকৃতির সাদৃশু দেখানে হয়েছে কেননা ওর স্বভাবটা স্তন্ধ, ওর ভাবনাগুলো অস্তমুখী, মেঘের ছায়া, অরণ্যের গন্ধ, বৃষ্টির শব্দ, বিকেল বেলার রোদ র গাছেদের মতোই ও যেন সমস্ত দেহ দিয়ে অনুভব করে ; আমের বোল ধরবার সময় আমগাছের মজ্জার ভিতরকার চাঞ্চল্য ও যেন নিজের রক্তের মধ্যে জানতে পারত। মাটির ভিতর থেকে গাছের অঙ্কুরগুলো ওর সঙ্গে যেন কথা কইত । তরুলতা প্রাণের প্রকাশ এনেছিল পৃথিবীতে বহুকোটি বছর আগে । সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত দু্যলোক থেকে আলোক দোহন ক’রে নিয়েছে, পৃথিবী থেকে নিয়েছে প্রাণের রস । এ লেখক বলছেন এই ছেলেটি যেন সেই কোটি বছর আগের বালক, যেন সেই প্রথম প্রাণবিকাশের সমবয়সী । একটি শিমুল গাছের সঙ্গে কী রকম ক’রে আত্মীয়সম্বন্ধ বেড়ে উঠেছিল এবং তারপরে কী ঘটল তাই বলে ।