পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१९ রবীন্দ্র-রচনাবলী বাহির করিতেছে! তোমাদের বিজ্ঞতার প্রাণটা একরত্তি, তাহাকে ছুইলেই কচ্ছপের মত সে নিজের পেটের মধ্যে প্রবেশ করে ; তোমাদের বিজ্ঞতার হাসিতে কৃপণতা, তাহার ভাষায় দুর্ভিক্ষ, তাহার আলিঙ্গন কাকড়ার আলিঙ্গনের মত, জিনিষ কিনিয়া সে কাণাকড়ি দিয়া তাহার দাম শোধ করে ! এ বিজ্ঞতা লইয়া তোমরাই গৰ্ব্ব কর । যে বিজ্ঞ সদনুষ্ঠানকে উপহাস করে, তাহা অপেক্ষ যে সরল ব্যক্তি সদনুষ্ঠানে চেষ্ট করিয়া অকৃতকাৰ্য্য হইয়াছে সে মহৎ ; যে মশক হস্তীকে বিত্ৰত করিয়া তোলে সে মশক হস্তীর চেয়ে বড় নহে—যে পাকে সৎপথগামী সাধুর পা বসিয়া গেছে, সে পাকের জাক করিবার বিষয় কিছুই নাই । সংশয় করিয়া, বিদ্রুপ করিয়া, অসৎ অভিসন্ধি আবিষ্কার করিয়া অনেক বিজ্ঞ অনেক সৎকাৰ্য্যকে অস্কুরে দলিত করিয়া দিয়াছেন, অনেক তরুণ হৃদয়ের নবীন আশাকে তাহাদের হাস্যের বিদ্যুতাঘাতে চিরকালের জন্য দগ্ধ করিয়াছেন, অনেক উন্মুখ প্রতিভাকে নিষ্ঠুর ভাবে পীড়ন করিয়া হয়ত পৃথিবীর এক একটা শতাব্দীকে অমুর্বর মরুময় করিয়া দিয়াছেন—ইহারা যদি এই সকল দলিত অঙ্কুর, দগ্ধ আশা, ভগ্ন হৃদয় স্তুপাকৃতি করিয়া নিজের কীৰ্ত্তিস্তম্ভ রচনা করেন, তবে কি কোন পিরামিড় আয়তনে তাহার সমকক্ষ হইতে পারে ? রোগ তুর্ভিক্ষের সহোদর বিজ্ঞতা শ্মশানের ভস্ম দিয়া একটা উৎসবাগার নির্মাণ করিয়াছে, সেখানে অস্থিকঙ্কালের নৃত্য হইতেছে, হৃদয়-শোণিতের মদ্যপান চলিতেছে, খরধার রসনা-খড়েগ আশ-উদ্যমের বলি হইতেছে ; আইস, যাহাদের হৃদয় আছে, আমরা প্রকৃতিমাতার উৎসবালয়ে যাই ; সেখানে জীবনের অভিনয় হইতেছে, সেখানে সৌন্দর্ঘ্যের উৎস উৎসারিত হইতেছে, সেখানে মাপাজোকা কাপণ্য নাই, সেখানে বাকাচোর অনুদারতা নাই—সেখানে দুইমুখা প্রাণ নাই। এ সকল বিজ্ঞলোকদের সহিত আমাদের পোষাইবে না—আমরা ইহাদের চিনিতে পারিব না, ইহাদের কথা ভাল বুঝিতে পারিব না—ইহার উপদেশ দিবার সময় বড় বড় নীতিকথা বলে, কিন্তু ইহাদের মনে পাপ আছে, ইহাদের সর্বাঙ্গে সংক্রামক রোগ ! جيم துகாக