পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) প্রথম খণ্ড.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 রবীন্দ্র-রচনাবলী অবশেষে শ্রাস্ত হয়ে তোমারে শুধাই দেবি এ শূন্ত পূরিবে না কি কিছুতে আমার ? উঠিছে তপন শশী, অস্ত যাইতেছে পুন:, বসন্ত শরত শীত চক্রে ফিরিতেছে ; প্রতি পদক্ষেপে আমি বাল্যকাল হোতে দেবি ক্রমে ক্রমে কত দূর যেতেছি চলিয়া— বাল্যকাল গেছে চলে, এসেছে যৌবন এবে, যৌবন যাইবে চলি আসিবে বাৰ্দ্ধক্য— তবু এ মনের শূন্য কিছুতে কি পূরিবে না ? মন কি করিবে হুহু চিরকাল তরে ? শুনিয়াছিলাম কোন উদাসী যোগীর কাছে— ‘মানুষের মন চায় মাহষেরি মন ; গম্ভীর সে নিশীথিনী, সুন্দর সে উষাকাল, বিষন্ন সে সায়াহ্নের মান মুখচ্ছবি, বিস্তৃত সে অস্বনিধি, সমুচ্চ সে গিরিবর, অঁাধার সে পৰ্ব্বতের গহবর বিশাল, তটিনীর কলধ্বনি, নিঝরের ঝর ঝর, আরণ্য বিহঙ্গদের স্বাধীন সঙ্গীত, পারে না পূরিতে তারা বিশাল মচুন্য-হৃদি– মানুষের মন চায় মাতুষেরি মন । শুনিয়া, প্রকৃতিদেবি, ভ্ৰমিল্প পৃথিবীময় ; কত লোক দিয়েছিল হৃদি উপহার— আমার মৰ্ম্মের গান যবে গাহিতাম দেবি কত লোক কেঁদেছিল শুনিয়া সে গীত । তেমন মনের মত মন পেলাম না দেবি, অামাব প্রাণের কথা বুঝিল না কেহ, তাইতে নিরাশ হোয়ে আবার এসেছি ফিরে, বুঝি গো এ শূন্য মন পূরিল না জার।” এইরূপ কেঁদে কেঁদে কাননে কাননে কবি একাকী আপন-মনে করিত ভ্রমণ ।