পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) প্রথম খণ্ড.pdf/৩৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী و O6ا তাহার আস্তম্ভমধ্য দেখিলে তাহাকে ততটা কালো দেখায় না। আমরা বাহাকে ভালবাসি না তাহার জোযটুকুই দেখি, আর কিছু দেখি না। দেখি না ৰে মহন্তপ্রকৃতিতে সে দোষ সম্ভব, অবস্থাবিশেষে সে দোষ অবশুম্ভাবী ও সে দোষ সত্ত্বেও তাহার অন্তান্ত এমন গুণ আছে যাহাতে তাহাকে ভালবাসা যায়। অতএব দেখা যাইতেছে, বিরাগে আমরা যতটুকু দেখিতে পাই অঙ্গরাগে তাহার অপেক্ষ অনেক অধিক দেখি। অনুরাগে আমরা দোষ দেখি, আবার সেই সঙ্গে তাহ মার্জনা করিবার কারণ দেখিতে পাই। বিরাগে কেবল দোষ মাত্রই দেখি। তাহার কারণ বিরাগের দৃষ্টি অসম্পূর্ণ, তাহার একটা মাত্র চক্ষু। আমাদের উচিত, ভালবাসার পাত্রের দোষ গুণ আমরা যে নজরে দেখি, অন্তদের দোষ গুণও সেই নজরে দেখি। কারণ, ভালবাসার পাত্রদেরই আমরা যথার্থ বুঝি। যাহাজের ভালবাসা প্রশস্ত, হৃদয় উদার, বস্থধৈব কুটুম্বকং, তাহারা সকলকেই মার্জন করিতে পারেন। তাহার কারণ, তাহারাই যথার্থ মানুষদের বুঝেন, কাহাকেও ভুল বুঝেন না। র্তাহাদের প্রেমের চক্ষু বিকশিত, এবং প্রেমের চক্ষুতে কখনো নিমেষ পড়ে না। র্তাহারা মানুষকে মানুষ বলিয়া জানেন । শিশুর পদস্খলন হইলে তাহাকে যেমন কোলে করিয়া উঠাইয়া লন, আত্মসংযমনে অক্ষম একটি দুৰ্ব্বল হৃদয় ভূপতিত হইলে তাহাকেও তেমনি তাহাদের বলিষ্ঠ বাহুর সাহায্যে উঠাইতে চেষ্টা করেন। দুর্বলতাকে তাহারা দয়া করেন, ঘৃণা করেন না । বসন্ত ও বর্ষ। এক বিরহিণী আমাদের জিজ্ঞাসা করিয়া পাঠাইয়াছেন— বিরহের পক্ষে বসন্ত গুরুতর কি বর্ষা গুরুতর ? এ বিষয়ে তিনি অবশু আমাদের অপেক্ষা ঢের ভাল বুঝেন। তবে উভয় ঋতুর অবস্থা আলোচনা করিয়া যুক্তির সাহায্যে আমরা একটা সিদ্ধান্ত খাড়া করিয়া লইয়াছি। মহাকবি কালিদাস দেশান্তরিত বক্ষকে বর্ষাকালেই বিরহে ফেলিয়াছেন। মেৰকে দূত করিবেন বলিয়াই যে এমন কাজ করিয়াছেন, তাহা বোধ হয় না। বসন্তকালেও দূতের অভাব নাই। বাতাসকেও দূত করিতে পারিতেন। একটা বিশেষ কারণ থাকাই সম্ভব । বসন্ত উদাসীন, গৃহত্যাগী। বর্ষ সংসারী, গৃহী। বসন্তু আমাদের মনকে চারি