পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) প্রথম খণ্ড.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●bア রবীন্দ্র-রচনাবলী সমীরে কুটারশিরে লতা স্কুলে ধীরে ধীরে বিতরিয়া চারি দিকে পুষ্পপরিমল ! আবার পথিকবর আঘাতে দুয়ার-’পর— ধীরে ধীরে খুলে গেল শিথিল অর্গল । বিস্ফারিয়া নেত্রদ্বয় পথিক অবাক রয়, বিস্ময়ে দাড়ায়ে আছে ছবির মতন। কেন পান্থ, কেন পাস্থ, মৃগ যেন দিকৃপ্রাস্ত অথবা দরিত্র যেন হেরিয়া রতন ! কেন গো কাহার পানে দেখিছ বিস্মিত প্রাণে— অতিশয় ধীরে ধীরে পড়িছে নিশ্বাস ? দারুণ শীতের কালে ঘৰ্ম্মবিন্দু ঝরে ভালে, তুষারে করিয়া দৃঢ় বহিছে বাতাস । ক্রমে ক্রমে হয়ে শাস্ত স্বধীরে এগোয় পাম্ব, থর থর করি কাপে যুগল চরণ— ধীরে ধীরে তার পরে সভয়ে সঙ্কোচ ভরে পথিক অনুচ্চ স্বরে করে সম্বোধন— *সুন্দরি ! সুন্দরি ” হায় । উত্তর নাহিক পায় ! আবার ডাকিল ধীরে “সুন্দরি । সুন্দরি ” শব্দ চারি দিকে ছুটে, প্রতিধ্বনি জাগি উঠে, কুটার গম্ভীরে কহে “সুন্দরি । স্বাদরি ” তবুও উত্তর নাই, নীরব সকল ঠাই, এখনো পৃথিবী ধরা নীরবে ঘুমায় ! নীরব পরণশালা, নীরব ষোড়শী বালা, নীরবে স্বধীর বায়ু লতারে দুলায় ! পথিক চমকি প্রাণে দেখিল চৌদিক-পানে— কুটীরে ডাকিছে কেও "কমলা ! কমলা ।” অবাক হইয়া রঙ্গে, অস্ফুটে কে ওগো কহে ? স্বমধুর স্বরে যেন বালকের গলা! পথিক পাইয়া ভয়, চমকি দাড়ায়ে রয়, কুটারের চারি ভাগে নাই কোনজন !