পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>>8 রবীন্দ্র-রচনাবলী রাজধর । সুযোগ কি তীরের মুখে থাকে—স্থযোগ বুদ্ধির ডগায় । তোমাকে কিন্তু একটি কাজ করতে হবে । ধুরন্ধর । কাজ তো তোমার বরাবরই করে আসছি, ফল তো কিছু পাই নে । রাজধর । ফল সবুরে পাওয়া যায়। কোনোরকম ফন্দিতে ইজকুমার-দাদার অস্ত্রশালায় ঢুকে তার তুণের প্রথম খোপটি থেকে তার নাম-লেখা তাঁরটি তুলে নিয়ে আমার নাম-লেখা তীর বসিয়ে আসতে হবে । তার সঙ্গে আমার তীর বদল করতে হবে, ভাগ্যও বদল হবে। ধুরন্ধর। সবই যেন বুঝলুম কিন্তু আমার প্রাণটি । সেটি গেলে তো কারও সঙ্গে বদল চলবে না । রাজধর । তোমার কোনো ভয় নেই, আমি আছি । ধুরন্ধর । তুমি তো বরাবরই আছ কিন্তু ভয়ও আছে। সেই যখন ইন্দ্রকুমারের রুপোর পাত-দেওয়া ধন্থকটার উপরে তুমি লোভ করলে আমিই তো সেটি সংগ্রহ করে তোমার ঘরে এনে লুকিয়ে রেখেছিলুম—শেষকালে যখন ধরা পড়লে ইন্দ্রকুমার স্বণ করে সে-ধমুকটা তোমাকে দান করলেন কিন্তু আমার যে অপমানটা করলেন সে আমার জীবন গেলেও যাবে না। তখন তো ভাই তুমি ছিলে—রক্ষা যত করেছিলে সে আমার মনে আছে । রাজধর । এবার তোমার সময় এসেছে—সেই অপমানের শোধ দেবার জোগাড় করে । ধুরন্ধর । সময় কখন কার আসে সেটা ধে পরিষ্কার বোঝা যায় না। দুর্বল লোকের পক্ষে অপমান পরিপাক করবার শক্তিটাই ভালো ; শোধ তোলবার শখটা তার পক্ষে নিরাপদ নয়। ওই যে ওঁর। সব আসছেন । আমি পালাই । তোমার সঙ্গে আমাকে একত্রে দেখলেই ইন্দ্রকুমার যে-কথাগুলি বলবেন তাতে মধুবর্ষণ করবে না—আর ইশা খাও যে তোমার চেয়ে আমার প্রতি বেশি ভালোবাসা প্রকাশ করবেন এমন ভরসা আমার নেই। [ প্রস্থান