পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

›ዓ8 রবীন্দ্র-রচনাবলী চন্দ্রনাথবাবু আর-একদিন এসে বললেন, তোমরা দুজনে কিছুদিনের জন্তে একবার দাৰ্জিলিং বেড়াতে যাও—তোমার মুখ দেখে আমার বোধ হয় তোমার শরীর ভালো নেই। ভালো ঘুম হয় না বুঝি ? বিমলকে সন্ধ্যার সময় বললুম, বিমল দাৰ্জিলিঙে বেড়াতে যাবে ? আমি জানি দাঞ্জিলিঙে গিয়ে হিমালয় পর্বত দেখবার জন্তে বিমলের খুব শপ ছিল । সেদিন সে বললে, না, এখন থাক । দেশের ক্ষতি হবার আশঙ্কা ছিল । আমি বিশ্বাস হারাব না, আমি অপেক্ষ করব । ছোটো জায়গা থেকে বড়ো জায়গায় যাবার মাঝখানকার রাস্তা ঝ'ড়ে। রাস্তা ; ঘরের চতুঃসীমানায় যে-ব্যবস্থাটুকুর মধ্যে বিমলের জীবন বাসা বেঁধে বসে ছিল, ঘরের বাইরে এসে হঠাৎ সে-ব্যবস্থায় কুলোচ্ছে না। অচেনা বাইরের সঙ্গে চেনাগুনো সম্পূর্ণ হয়ে যখন একটা বোঝাপড়া পাকা হয়ে যাবে তখন দেখব আমার স্থান কোথায় । যদি দেখি এই বৃহৎ জীবনের ব্যবস্থার মধ্যে কোথাও আমি আর খাপ খাই নে তাহলে বুঝব এতদিন যা নিয়ে ছিলুম সে কেবল ফাকি । সে-ফাকিতে কোনো দরকার নেই। সে দিন যদি আসে তো ঝগড়া করব না, আস্তে আস্তে বিদায় হয়ে যাব । জোর-জবরদস্তি ? কিসের জন্তে ? সত্যের সঙ্গে কি জোর খাটে ? সন্দীপের আত্মকথা যেটুকু আমার ভাগে এসে পড়েছে সেইটুকুই আমার, এ-কথা অক্ষমেরা বলে আর দুর্বলের শোনে। যা আমি কেড়ে নিতে পারি সেইটেই যথার্থ আমার, এই হল সমস্ত জগতের শিক্ষা । দেশে আপনা-আপনি জন্মেছি বলেই দেশ আমার নয়—দেশকে যেদিন লুট করে নিয়ে জোর করে আমার করতে পারব সেইদিনই দেশ আমার হবে । লাভ করবার স্বাভাবিক অধিকার আছে বলেই লোভ করা স্বাভাবিক । কোনো কারণেই কিছু থেকে বঞ্চিত হব প্রকৃতির মধ্যে এমন বাণী নেই। মনের দিক থেকে