পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘরে-বাইরে ૨ S છે বিরহে যে-মন্দির শূন্ত হয় সে-মন্দিরের শূন্ততার মধ্যেও বঁশি বাজে–কিন্তু বিচ্ছেদে যে-মন্দির শূন্ত হয় সে-মন্দির বড়ো নিস্তব্ধ, সেখানের কান্নার শব্দও বেস্বরে ८*jॉनोंध्र ! আজ আমার কান্না বেনুরো লাগছে । এ কান্না আমার থামাতেই হবে । অামার এই কান্না দিয়ে বিমলকে আমি বন্দী করে রাখব এমন কাপুরুষ যেন আমি না হই । ভালোবাসা যেখানে একেবারে মিথ্যা হয়ে গেছে সেখানে কাল্লা যেন সেই মিথ্যাকে বাধতে না চায়। যতক্ষণ আমার বেদন প্রকাশ পাবে ততক্ষণ বিমল একেবারে মুক্তি পাবে না । কিন্তু তাকে আমি সম্পূর্ণ মুক্তি দেব, নইলে মিথ্যার হাত থেকে আমিও মুক্তি পাব না । আজ তাকে আমার সঙ্গে বেঁধে রাখা নিজেকেই মায়ার জালে জড়িয়ে রাখা মাত্র । তাতে কারও কিছুই মঙ্গল নেই, মুখ তো নেইই । ছুটি দাও, ছুটি নাও—দুঃখ বুকের মানিক হবে যদি মিথ্যা থেকে খালাস পেতে পার। আমার মনে হচ্ছে যেন এই বার আমি একটা জিনিস বুঝতে পারার কিনারায় এসেছি। স্ত্রীপুরুষের ভালোবাসাটাকে সকলে মিলে ফু দিয়ে দিয়ে তার স্বাভাবিক অধিকার ছাড়িয়ে এতদূর পর্যন্ত তাকে বাড়িয়ে তুলেছি যে, আজ তাকে সমস্ত মনুষ্যত্বের দোহাই দিয়েও বশে আনতে পারছি নে। ঘরের প্রদীপকে ঘরের আগুন করে তুলেছি। এখন তাকে আর প্রশ্রয় দেওয়া নয়, তাকে অবজ্ঞা করবার দিন এসেছে। প্রবৃত্তির হাতের পূজা পেয়ে পেয়ে সে দেবীর রূপ ধরে দাড়িয়েছে ; কিন্তু তার সামনে পুরুষের পৌরুষ বলি দিয়ে তাকে রক্তপান করাতে হবে এমন পূজা আমরা মানব না। সাজে-সজ্জায়, লজ্জা-শরমে, গানে-গল্পে, হাসি-কান্নায়, যে-ইন্দ্ৰজাল সে তৈরি করেছে তাকে ছিন্ন করতে হবে । কালিদাসের ঋতুসংহার কাব্যের উপর বরাবর আমার একটা ঘৃণা আছে। পৃথিবীর সমস্ত ফুলের সাজি, সমস্ত ফলের ডালি কেবলমাত্র প্রেয়সীর পায়ের কাছে পড়ে পঞ্চশরের পূজার উপচার যোগাচ্ছে জগতের আনন্দলীলাকে এমন করে ক্ষুন্ন করতে মাহুষ পারে কী করে ? এ কোন মদের নেশায় কবির চোখ চুলে পড়েছে ? আমি যে-মদ এতদিন পান করছিলুম তার রঙ এত লাল নয়, কিন্তু তার নেশা তো এমনিই তীব্র । এই নেশার বোকেই আজ সকাল থেকে গুন গুন করে মরছি, छब्रां बांघब्र भांइ छांभद्भ শূন্ত মন্দির মোর । শূন্ত মন্দির । বলতে লজ্জা করে না ? এতবড়ো মন্দির কিসে তোমার শূন্ত