পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য එNA এই যে শক্ত ভিত্তি, ইহাই সংযম । ইহার মধ্যে বিচার আছে, বল আছে, ত্যাগ আছে, ইহার মধ্যে নির্মম দৃঢ়তা আছে । ইহা দেবতার মতো এক হাতে বর দেয়, আর এক হাতে সংহার করে। এই সংযম গড়িবার বেলাও যেমন দৃঢ়, ভাঙিবার বেলাও তেমনি কঠিন। সৌন্দর্যকে পুরামাত্রায় ভোগ করিতে গেলে এই সংযমের প্রয়োজন ; নতুবা প্রবৃত্তি অসংযত থাকিলে শিশু ভাতের থালা লইয়া যেমন অল্পব্যঞ্জন কেবল গায়ে মাখিয়া মাটিতে ছড়াইয়া বিপরীত কাও করিয়৷ তোলে, অথচ অল্পই তাহার পেটে যায়—ভোগের সামগ্ৰী লইয়া আমাদের সেই দশা হয় ; আমরা কেবল তাহা গায়েই মাখি, লাভ করিতে পারি না । সৌন্দর্যস্থষ্টি করাও অসংযত কল্পনাবৃত্তির কর্ম নহে । সমস্ত ঘরে আগুন লাগাইয়া দিয়া কেহ সন্ধ্যাপ্রদীপ জালায় না। একটুতেই আগুন হাতের বাহির হইয়া ধায় বলিয়াই ঘর আলো করিতে আগুনের উপরে দখল রাখা চাই। প্রবৃত্তি-সম্বন্ধেও সে-কথা খাটে। প্রবৃত্তিকে যদি একেবারে পুরামাত্রায় জলিয়া উঠিতে দিই, তবে যে-সৌন্দর্ধকে কেবল রাঙাইয়া তুলিবার জন্ত তাহার প্রয়োজন, তাহাকে জালাইয়া ছাই করিয়া তবে সে ছাড়ে, ফুলকে তুলিতে গিয়া তাহাকে ছিড়িয়া ধুলায় লুটাইয়া দেয় | এ-কথা সত্য, সংসারে আমাদের ক্ষুধিত প্রবৃত্তি যেখানে পাত পাড়িয়া বসে,তাহার কাছাকাছি প্রায়ই একটা সৌন্দর্যের আয়োজন দেখিতে পাওয়া যায়। ফল যে কেবল আমাদের পেট ভরায়, তাহা নহে, তাহা স্বাদে গন্ধে দৃশ্বে স্বন্দর। কিছুমাত্র স্বনার যদি নাও হইত তবু আমরা তাহাকে পেটের দায়েই খাইতাম । আমাদের এতবড়ো একটা গরজ থাকা সত্বেও কেবল পেট ভরাইবার দিক হইতে নয়, সৌন্দর্যভোগের দিক হইতেও সে আমাদিগকে আনন্দ দিতেছে। এটা আমাদের প্রয়োজনের उषडिब्रिड लांड । জগতে সৌন্দর্ব বলিয়া এই যে আমাদের একটা উপরি-পাওনা, ইহা আমাদের মনকে কোনদিকে চালাইতেছে ? ক্ষুধাতৃপ্তির কোকটাই যাহাতে একেশ্বর হইয়া না ওঠে, যাহাতে আমাদের মন হইতে তাহার ফাস একটু আলগা হয়, সৌনর্ষের সেই চেষ্টা দেখিতে পাই। চণ্ডী ক্ষুধা অগ্নিমূর্তি হইয়া বলিতেছে, তোমাকে খাইতেই হইবে, ইহার উপরে আর কোনো কথা নাই। আমনি সৌন্দর্যলক্ষ্মী হাসিমুখে মুধাবর্ষণ করিয়া অতু্যগ্র প্রয়োজনের চোখরাঙানিকে আড়াল করিয়া দিতেছেন, পেটের জালাকে নিচের তলায় রাখিয়া উপরের মহালে আনন্মভোজের মনোহর আয়োজন করিতেছেন। শনিবাৰ প্রয়োজনের মধ্যে মাছবের একটা অবমাননা আছে, কিন্তু সৌন্দর্য নাকি