পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

•जोझिाङ, ©ጫ¢ এবং কালে ষে-মান্থৰ যত বেশি মানুষের মধ্যে আপনার আত্মাকে মিলাইয়া নিজেকে উপলব্ধি ও প্রকাশ করিতে পারিয়াছেন, তিনি ততই মহৎ মানুষ। তিনি যথার্থ ই মহাত্মা । সমস্ত মানুষেরই মধ্যে আমার আত্মার সার্থকতা, এ যে-ব্যক্তি কোনো-নাকোনো স্বযোগে কিছু-না-কিছু বুঝিতে পারিয়াছে, তাহার ভাগ্যে মনুস্তত্বের ভাগ কম পড়িয়া গেছে। সে আত্মাকে আপনার মধ্যে জানাতেই আত্মাকে ছোটো করিয়া জানে। সকলের মধ্যেই নিজেকে জানা, আমাদের মানবাত্মার এই যে একটা স্বাভাবিক ধর্ম, স্বার্থ তাহার একটা বাধা, অহংকার তাহার একটা বাধা ; সংসারে এই সকল নানা বাধায় আমাদের আত্মার সেই স্বাভাবিক গতিস্রোত খণ্ডখণ্ড হইয়া যায়, মচুন্যত্বের পরিপূর্ণ সৌন্দর্ধকে আমরা অবাধে দেখিতে পাই না। . কিন্তু জানি, কেহ কেহ তর্ক করিবেন, মানবাত্মার যেটা স্বাভাবিক ধর্ম, সংসারে তাহার এত লাঞ্ছনা কেন ? যেটাকে তুমি বাৰা বলিয়া উড়াইয়া দিতেছ, যাহা স্বার্থ, যাহা অহংকার, তাহাকেই বা স্বাভাবিক ধর্ম না বলিবে কেন ? বস্তুত অনেকে তাহা বলিয়াও থাকে। কেননা, স্বভাবের চেয়ে স্বভাবের বাধাটাই বেশি করিয়া চোখে পড়ে। দুই-চাকার গাড়িতে মানুষ যখন প্রথম চড়া অভ্যাস করে, তখন চলার চেয়ে পড়াটাই তাহার ভাগ্যে বেশি ঘটে। সেই সময়ে কেহ যদি বলে, লোকটা চড়া অভ্যাস করিতেছে না, পড়াই অভ্যাস করিতেছে, তবে তাহা লইয়া তর্ক করা মিথ্যা । সংসারে স্বার্থ এবং অহংকারের ধাক্কা তো পদে পদেই দেখিতে পাই, কিন্তু তাহার ভিতর দিয়াও মানুষের নিগৃঢ় স্বধৰ্মরক্ষার চেষ্টা অর্থাং সকলের সঙ্গে মিলিবার চেষ্টা যদি না দেখিতে পাই, যদি পড়াটাকেই স্বাভাবিক বলিয়া তকরার করি, তবে সে নিতান্তই কলহ করা হয় । বস্তুত যে-ধর্ম আমাদের পক্ষে স্বাভাবিক, তাহাকে স্বাভাবিক বলিয়া জানিবার জন্যই, তাহাকে তাহার পুরা দমে কাজ জোগাইবার জন্যই তাহাকে বাধা দিতে হয়। সেই উপায়েই সে নিজেকে সচেতনভাবে জানে—এবং তাহার চৈতন্য যতই পূর্ণ হয়, তাহার জানঙ্গও ততই নিবিড় হইতে থাকে। সকল বিষয়েই এইরূপ। এই যেমন বুদ্ধি। কার্যকারণের সম্বন্ধ ঠিক করা বুদ্ধির একটা ধর্ম। সহজপ্রত্যক্ষ জিনিসের মধ্যে সে যতক্ষণ তাহ সহজেই করে ততক্ষণ সে নিজেকে যেন পুরাপুরি দেখিতেই পায় না। কিন্তু বিশ্বজগতে কার্বকারণের সম্বন্ধগুলি এতই গোপনে তলাইয়া আছে যে, তাহ উদ্ধার করিতে বুদ্ধিকে নিয়তই প্রাণপণে খাটিতে হইতেছে। এই বাধা কাটাইবার খাটুনিতেই বুদ্ধি বিজ্ঞানদর্শনের মধ্যে নিজেকে খুব নিবিড়