পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য eva হইয়া আছে ; তাহার ছোটো ঘরটির স্থখছুঃখকে সে কত চন্দ্রস্থর্ববংশীয় রাজাদের সুখদুঃখের কাহিনীর মধ্যে বড়ো করিয়া তুলিয়াছে ; তাহার ঘরের মেয়েটিকে ঘিরিয়া গিরিরাজকন্যার করুণা সর্বদা সঞ্চরণ করিতেছে ; কৈলাসের দরিদ্রদেবতার মহিমার মধ্যে সে আপনার দারিদ্র্যছঃখকে প্রসারিত করিয়া দিয়াছে; এইরূপে অনবরত মানুষ আপনার চারিদিকে যে বিকিরণ স্বষ্টি করিতেছে, তাহাতে বাহিরে যেন নিজেকে নিজে ছাড়াইয়া নিজেকে নিজে বাড়াইয়া চলিতেছে। যে-মান্থব অবস্থার দ্বারা সংকীর্ণ, সেই মাস্থ্য নিজের ভাবস্থাষ্টদ্বারা নিজের এই যে বিস্তার রচনা করিতেছে, ংসারের চারিদিকে যাহা একটি দ্বিতীয় সংসার, তাহাই সাহিত্য । এই বিশ্বসাহিত্যে আমি আপনাদের পথপ্রদর্শক হইব, এমন কথা মনেও করিবেন না। নিজের নিজের সাধ্য অনুসারে এ-পথ আমাদের সকলকে কাটিয়া চলিতে হইবে। আমি কেবল এইটুকু বলিতে চাহিয়াছিলাম যে, পৃথিবী যেমন আমার থেত এবং তোমার খেত এবং তাহার খেত নহে ; পৃথিবীকে তেমন করিয়া জানা অত্যন্ত গ্রাম্যভাবে জানা—তেমনি সাহিত্য আমার রচনা তোমার রচনা এবং তাহার রচনা নহে ; আমরা সাধারণত সাহিত্যকে এমনি করিয়াই গ্রাম্যভাবেই দেখিয়া থাকি। সেই গ্রাম্য সংকীর্ণত হইতে নিজেকে মুক্তি দিয়া বিশ্বসাহিত্যের মধ্যে বিশ্বমানবকে দেখিবার লক্ষ্য আমরা স্থির করিব—প্রত্যেক লেখকের রচনার মধ্যে একটি সমগ্রতাকে গ্রহণ করিব, এবং সেই সমগ্রতার মধ্যে সমস্ত মামুষের প্রকাশচেষ্টার সম্বন্ধ দেখিব, এই সংকল্প স্থির করিবার সময় উপস্থিত হইয়াছে। రి)\రి সৌন্দর্য ও সাহিত্য “সৌন্দর্যবোধ” ও “বিশ্বসাহিত্য” প্রবন্ধে আমার বক্তৰ্যবিষয়টি স্পষ্ট হয় নাই, এমন অপবাদ প্রচার হওয়াতে যথাসাধ্য পুনরুক্তি বঁাচাইয়া মূলকথাটা পরিষ্কার করিয়া লইবার চেষ্টায় প্রবৃত্ত হইলাম । so যেমন জগতে থে-ঘটনাটিকে কেবল এইমাত্র জানি ধে, তাহ ঘটতেছে, কিন্তু কেন ঘটিতেছে, তাহার পূর্বাপর কী, জগতের অক্সান্ত ঘটনার সঙ্গে তাহার সম্বন্ধ কোথায়, তাহা ন জানিলে তাহাকে পুরাপুরি জামাদের জ্ঞানে জানা হয় না—তেমনি জগতে যে সত্য কেবল আছে মাত্র বলিয়াই জানি, কিন্তু তাহাতে আমার কোনো আনন্দই