পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য 8也》 আমি অসীমের দ্বারে গিয়া উপস্থিত হই । আমার প্রিয় মুখ যখন আমাকে আহবান করে, তখন সে আমাকে আমার ক্ষুদ্রত হইতে আহবান করে ;–যতই অধিক ভালোবাসি ততই আমার ভালোবাসার প্রাবল্যের মধ্যে আপনার বিপুলতা বুঝিতে পারি। প্রেমের মধ্যে সৌন্দর্ষের মধ্যে হৃদয়ের বন্ধনমুক্তি হয় । - কিন্তু কাব্যপ্রসঙ্গে উপকারিতার কথা এইজন্ত উত্থাপন করা যায় না যে, কাব্যের আনুষঙ্গিক ফল যাহাই হউক কাব্যের উদ্দেশু উপকার করিতে বসা নহে । যাহা সত্য যাহা স্বন্দর তাহাতে উপকার হইবারই কথা কিন্তু সেই উপকারিতার পরিমাণের উপর তাহার সত্যতা ও সৌন্দর্ষের পরিমাণ নির্ভর করে না। সৌন্ধৰ্ব আমাদের উপকার করে বলিয়া স্থলর নহে, মুন্দর বলিয়াই উপকার করে । উপকারিতাপ্রসঙ্গে কবিতাকে বিচার করিতে বসিলে সর্বদাই ভ্রমের সম্ভাবনা থাকিয়া যায়। কারণ, উপকার নানা উপায়ে হয় ;—কবিতার মধ্যে উপকার অন্বেষণ যাহাদের স্বভাব তাহার কাব্যের মধ্যে যে কোনো উপকার পাইলেই চরিতার্থ হয়, বিচার করে না তাহা যথার্থ কাব্যের প্রকৃতিগত কিনা। এমন অনেক পাঠক দেখা গিয়াছে যাহারা ছন্দোবন্ধে অদৃষ্টবাদ অথবা অভিব্যক্তিবাদ সম্বন্ধে কোনো কথা পাইলেই আনন্দে ব্যাকুল হইয়া উঠে, মনে করে ইহাতে মানবের পরম উপকার হইতেছে। এবং তাহারা কোনো বিশেষ কবিতার সৌন্দর্য স্বীকার করিয়াও তাহার উপকারিতার অভাব লইয়া অপ্রসন্নতা প্রকাশ করিয়া থাকে। যেমন ব্যবসায়ী লোক আক্ষেপ করে পৃথিবীর সমস্ত ফুলবাগান তাহার মুলার খেত হইল না কেন । সে স্বীকার করিবে ফুল স্বন্দর বটে কিন্তু কিছুতে বুঝিতে পারিবে না তাহাতে ফল কী আছে । Տ Ջ ՋԵ বাংলাসাহিত্যের প্রতি অবজ্ঞা যাহারা অনেক ইংরেজি কেতাব পড়িয়াছেন তাহারা অনেকেই আধুনিক বাংলা লেখা ও লেখকদের প্রতি কৃপাকটাক্ষ নিক্ষেপ করিয়া থাকেন। এইরূপ অবজ্ঞা প্রকাশ করিয়া তাহারা অনেকটা আত্মপ্রসাদ লাভ করেন। বোধ করি ইতর সাধারণ হইতে আপনাকে স্বতন্ত্ৰ করিয়া লইয়া অভিমানে তাহারা আপাদমস্তক কণ্টকিত হইয়া উঠেন। একটা কথা জুলিয়া যান যে, পৃথিবীতে বড়ো হওয়া শক্ত