পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

898 রবীন্দ্র-রচনাবলী দিনে দুই বন্ধুতে মিলে রাস্তায় বেরিয়ে পড়া ; তার পরে যেখানে গিয়ে পড়ি তাতে কিছু আসে যায় না—এবং পথ হারালেও কোনো মনিবের কাছে কৈফিয়ত দেবার cनहे । দস্তুরমতো রাস্তায় চলতে গেলে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলবার জো থাকে না । কিন্তু প্রাপ্য জিনিসের চেয়ে ফাউ যেমন বেশি ভালো লাগে তেমনি অধিকাংশ সময়েই অপ্রাসঙ্গিক কথাটায় বেশি আমোদ পাওয়া যায় ; মূল কথাটার চেয়ে তার আশপাশের কথাটা বেশি মনোরম বোধ হয় ; অনেক সময়ে রামের চেয়ে হনুমান এবং লক্ষ্মণ, যুধিষ্ঠিরের চেয়ে ভীষ্ম এবং ভীম, স্বর্যমুখীর চেয়ে কমলমণি বেশি প্রিয় বলে ८दांथ श्ब्र । অবশু, সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক কথা বললে একেবারে পাগলামি করা হয় ; কিন্তু তাই বলে নিজের নাসাগ্রভাগের সমস্বত্র ধরে ভূমিকা থেকে উপসংহার পর্যস্ত একেবারে সোজা লাইনে চললে নিতাস্ত কলে তৈরি প্রবন্ধের স্বষ্টি হয়, মামুষের হাতের কাজের মতে হয় না । সে-রকম অঁাটার্তাটি প্রবন্ধের বিশেষ আবশ্যক আছে এ-কথা কেউ অস্বীকার করতে পারে না, কিন্তু সর্বত্র তারই বড়ো বাহুল্য দেখা যায়। সেগুলো পড়লে মনে হয় যেন সত্য তার সমস্ত স্বসংলগ্ন যুক্তিপরম্পরা নিয়ে একেবারে সম্পূর্ণভাবে কোথা থেকে আবিভূত হল। মানুষের মনের মধ্যে সে যে মানুষ হয়েছে, সেখানে তার যে আরও অনেকগুলি সমবয়সী সহোদর ছিল, একটি বৃহৎ বিস্তৃত মানসপুরে যে তার একটি বিচিত্র বিহারভূমি ছিল, লেখকের প্রাণের মধ্যে থেকেই সে যে প্রাণ লাভ করেছে, তা তাকে দেখে মনে হয় না—মনে হয় যেন কোনো ইচ্ছাময় দেবতা যেমন বললেন “অমুক প্রবন্ধ হউক” অমনি অমুক প্রবন্ধ হল—“লেট দেয়ার বি লাইট অ্যাও দেয়ার ওআজ লাইট ।” এই জন্য তাকে নিয়ে কেবল আমাদের মাথার খাটুনি হয়, কেবলমাত্র মগজ দিয়ে সেটাকে হজম করবার চেষ্টা করা হয় ; আমাদের মানসপুরে যেখানে আমাদের নানাবিধ জীবন্তভাব জন্মাচ্ছে খেলছে এবং বাড়ছে সেখানে তার স্বর পরিচিতভাবে প্রবেশ করতে পারে না ; প্রস্তুত হয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে হয়, সাবধান হয়ে তার সঙ্গে কথা কইতে হয় ; তার সঙ্গে কেবল আমাদের একাংশের পরিচয় হয় মাত্র, ঘরের লোকের মতো সর্বাংশের পরিচয় ट्ञ नीं । ম্যাপে এবং ছবিতে অনেক তফাত । ম্যাপে পারস্পেকটিভ থাকতে পারে না ; দূর নিকটের সমান ওজন, সর্বত্রই অপক্ষপাত ; প্রত্যেক অংশকেই স্বল্পবিচারমতো তার যথাপরিমাণ স্থান নির্দেশ করে দিতে হয় ; কিন্তু ছবিতে অনেক জিনিস