পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য 8b" আমার সেই সামান্ত আদিম অপরাধ তুমি কিছুতেই মার্জনা করতে পারছ না ; তার পরে আমি যে-কথাই বলি না কেন তোমার মন থেকে সেটা আর যাচ্ছে না। আদম । যেমন প্রথম পাপে তার সমস্ত মানববংশসমেত স্বৰ্গচ্যুত হয়েছিলেন তেমনি আমার সেই প্রথম ক্রটি ধরে আমার সমস্ত সংস্কার ও যুক্তি-পরম্পরাস্বদ্ধ জামাকে মতচু্যত করবার চেষ্টায় আছ । আমার বলা উচিত ছিল লেখকের নিজত্ব নয়, মচুন্যত্ব প্রকাশই সাহিত্যের উদ্দেপ্ত । ( আমার মনের মধ্যে নিদেন সেই কথাটাই ছিল । ) কখনো নিজত্ব দ্বারা কখনো পরত্ব দ্বারা। কখনো স্বনামে কখনো বেনামে। কিন্তু একটা মন্থদ্য-আকারে । লেখক উপলক্ষ্য মাত্র, মানুষই উদ্বেশু। আমার গোড়াকার চিঠিতে যদি এ-কথা প্রকাশ হয়ে না থাকে তাহলে জেনো সেটা আমার অনিপুণতাবশত। একে তত্ত্ব, সাহিত্যের তত্ত্ব, তাতে আবার আমার মতো লোক তার ব্যাখ্যাকারক । কথা আছে, একে বোব। তাতে আবার বোলতায় কামড়েছে—একে গো গেী করা বই আর কিছু জানে না তার উপরে কামড়ের জালায় গোগানি কেবল বাড়িয়ে ভোলে । আমি যে এই আলোচনা করছি এ যেন মানসিক মৃগয়া করছি। একটা জীবন্ত জিনিসের পশ্চাতে ছুটোছুটি করে বেড়াচ্ছি—পদে পদে স্থান পরিবর্তন করছি, কখনো পর্বতের শিখরে কখনো পর্বতের গুহায় । এইজন্ত আমার সমস্ত আলোচনায় যদিও লক্ষ্যের ঐক্য আছে কিন্তু হয়তো পথের অনৈক্য পাবে। কিন্তু সে-সমস্ত মার্জন করে তুমিও যদি আমার সঙ্গে যোগ দাও যদি আমার পাশাপাশি ছোট, তাহলে আমার মৃগটি যদি বা সম্পূর্ণ ধরা না পড়ে নিদেন তোমার দৃষ্টিগোচর হয়। অর্থাৎ আমার প্রার্থনা এই যে, আমি যদি তোমাকে বোঝাতে ভুল করে থাকি তুমি নিজে ঠিকটা বোঝে। অর্থাৎ আমি যদি তোমাকে মাছটা ধরে দিতে না পারি, আমার পুকুরটা ছেড়ে দিচ্ছি, তুমিও জাল ফেলে। কিন্তু কিছু উঠবে কি ? সে-কথা বলতে পারি নে—সে তোমার অদৃষ্ট,—কিংবা আমার অদৃষ্ট, যাই বল । কিন্তু তোমার বিরুদ্ধে আমার একটা নালিশ আছে। তুমি আমারই কথাটাকে কেবল ঝুটি ধরে টেনে টেনে বের করছ—নিজের কথাটিকে বরাবর ৰেশ ঢেকেঢুকে সামলে রেখেছ । আমি যেন কেবল একটি জীবন্ত তলোয়ারের সঙ্গে লড়াই করছি— কেবল খোচা খাচ্ছি, কাউকে খোচা ফিরিয়ে দিতে পারছি নে। আমি বার বার যতই বুক ফুলিয়ে ফুলিয়ে দাড়াচ্ছি তোমার ততই আঘাত করবার স্থবিধে হচ্ছে। কিন্তু এটাকে কি স্তায়যুদ্ধ বলে ? | আমি ব্রাহ্মণ—কেবলমাত্র যুদ্ধের উৎসাহে আনন্দ পাই নে। আসল কথাটা কী