পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

जोझिछ, & S (t দিবে, তাহাতেও নহে এবং বহু হাজার বৎসর পূর্বে ষে-দলিল পাকা হইয়াছিল, "তাঁহাতেও না । অন্তকার সভায় আমার নিবেদন এই, সাহিত্য-পরিষদের মধ্যে আপনার সকলে মিলিয়া স্বদেশকে সত্য করিয়া তুলুন । বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলা এবং প্রত্যেক জেলার প্রত্যেক বাঙালি সাহিত্য-পরিষদের মধ্যে নিজের ইচ্ছা ও চেষ্টাকে একত্রে জাগ্ৰত করিয়া আজ যাহা অস্ফুট আছে তাহা স্পষ্ট করুন, যাহা ক্ষুদ্র আছে তাহাকে মহৎ করুন। কোনখানে এই পরিষদের কী অসম্পূর্ণত আছে, তাহ লইয়া প্রশ্ন করিবেন না, ইহাকে সম্পূর্ণ করিয়া তুলিয়া প্রত্যেকে গৌরবলাভ করুন। দেবপ্রতিমা ঘরে আসিয়া পড়িলে গৃহস্থকে তাহার পূজা সারিতেই হয় ; আজ বাঙালির ঘরে তিনটি দেবপ্রতিমা আসিয়াছে—সাহিত্য-পরিষৎ, শিক্ষাপরিষৎ ও শিল্পবিদ্যালয় ; ইহাদিগকে ফিরাইয়া দিলে দেশে যে-অমঙ্গল ঘটিবে, তাহার ভার আমরা বহন করিতে পারিব না । অনেকের মনে এ-প্রশ্ন উঠবে, দেশের কাজহিসাবে সাহিত্য-পবিষদের কাজটা এমনি কী একটা মস্ত ব্যাপার । এইরূপ প্রশ্ন আমাদের দেশের একটা বিষম বিপদ। যুরোপ-আমেরিকা তাহার প্রকাও কর্মশালা লইয়া আমাদের চোখের সামনে আসিয়া দাড়াইয়াছে, তাই দেখিয়া আমাদের অবস্থা বড়ো হইবার পূর্বেই আমাদের নজর বড়ো হইয়া উঠিয়াছে। যে-কাজ দেখিতে ছোটো তাহাতে উৎসাহই হয় না ,—এইজন্ত বীজরোপণ করা হইল না,—একেবারে আস্ত বনস্পতি তুলিয়া আনিয়া পুতিয়া অন্য দেশের অরণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করিবার জন্য ব্যস্ত হইয়া পড়িয়াছি । এ তো প্রেমের লক্ষণ নহে, এ অহংকারের লক্ষণ । প্রেমের অসীম ধৈর্ধ, কিন্তু অহংকার অত্যন্ত ব্যস্ত.। আমাদের দুর্ভাগ্য এই ষে ইংরেজ নানামতে আমাদিগকে অবজ্ঞা দেখাইয়া আমাদের অহংকারকে অত্যন্ত রাঙা করিয়া তুলিয়াছে। আমাদের এই কথাই কেবল বলিবার প্রবৃত্তি হইতেছে, আমরা কিছুতেই কম নই। এইজন্ত আমরা যাহা-কিছু করি, সেটাকে খুবই বড়ো করিয়া দেখাইতে না পারিলে আমাদের বুক ফাটিয়া যায়। একটা কাজ ফাদিবার প্রথমেই তো একটা খুব মস্ত নামকরণ হয়—নামের সঙ্গে "দ্যাশনাল” শব্দটা কিংবা ওইরকমের একটা বিদেশী বিড়ম্বন জুড়িয়া দেওয়া যায়। এই নামকরণ-অনুষ্ঠানেই গোড়ায় ভারি একটি পরিতৃপ্তি বোধ হয়। তার পরে বড়ো নামটি দিলেই বড়ো আয়তন ন দিলে চলে না,—নতুবা বড়ে নাম ক্ষুত্র আকৃতিকে কেবলই বিন্ধপ করিতে থাকে। তখন নিজের সাধ্যকে লঙ্ঘন করিতে চাই। তকমাওজালা