পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

é९8 রবীন্দ্র-রচনাবলী যেহেতু সেটা ছবি সেইজন্যেই তার মধ্যে মত-বিশ্বাস-সংস্কারের অতীত একটি জিনিস থাকবে,—সেটি হচ্ছে রস ; সে-রস যদি অহিন্দুর অগ্রাহ হয় তবে, হয়, রসবোধের অভাবে সেটা অহিন্দুর দোষ, নয় রসের অভাবে সেটা হিন্দু আর্টিস্টের দোষ। কিন্তু দোষটা মত-বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে না। প্রদীপ ইংরেজের এক রকম, এবং উীটুজ্জ্বলণ্ঠন চলতি হবার পূর্বে হিন্দুর অন্য রকম ছিল, তবু আলো জিনিসটা আলোই । দেশের হিতাহিত সম্বন্ধে আমার সঙ্গে পাঠকের মতভেদ থাকা সম্ভব— কিন্তু গল্পকে মত বলে দেখবার তো দরকার নেই—গল্প বলেই দেখতে হবে । গল্পের খাতির কিন্তু মত যখন এমন বিষয় নিয়ে যেটা দেশের একেবারে মর্মের কথা তখন পাঠকের কাছ থেকেও অতটা বেশি নিরাসক্ত রসাচুভূতি দাবি করা যায় না। তখন পাঠকের নিজের ব্যথা গল্পের ব্যথাকে ছাড়িয়ে ওঠে । অতএব সে-জায়গায় রসের বিচারের চেয়ে রসের বিষয়বিচারটা স্বভাবতই বড়ো না হয়ে থাকতে পারে না । আচ্ছা বেশ, তাই মানলুম। তা হলে এ-স্থলে লেখকের প্রতি উপদেশটা কী ? নিজে যেটাকে ভালো মনে করি পাঠকের খাতিরে চেষ্টা করব সেটাকে মন্দ মনে করতে ? পাঠক যদি গল্পের খাতিরে সে-কাজ করতে না পারেন তাহলে লেখকই বা পাঠকের খাতিরে এমন কাজ কী করে করবেন ? বস্তুত থাতিরটা গল্পের, লেখকেরও নয় পাঠকেরও নয়। সেই গল্পের খাতিরেই নিজের হৃদয়ভাব সম্বন্ধে লেখককে নিজের হৃদয় অনুসরণ করতে হবেই এবং সেই গল্পের খাতিরেই পাঠককে গল্পের রস অনুসরণ করতে হবে। যদি বলা যায় গল্পের খাতিরের চেয়ে দেশের খাতির বড়ো, তবে সে-কথা পাঠক সম্বন্ধেও যেমন খাটে লেখক সম্বন্ধেও তেমনি । তার সাময়িক একদল পাঠক তাকে বাহবা দেবে এ-কথা লেখকের ভাববার নয়, তিনি ভাববেন তার গল্পটি ঠিকমতো হওয়া চাই ; তাও যদি তাকে ভাবতে দেওয়া না যায় তবে দেশের ভালো হয় এই কথাই যেন তিনি ভাবেন, দেশ তাকে ভালো বলে এ-কথা নয় । पञांथTांग्निक লেখিকার দ্বিতীয় প্রশ্ন এই যে, এই উপন্যাসের আখ্যায়িকা কি আমার কল্পনাপ্রস্তুত, না বাস্তবে কোথাও তার আভাস পাওয়া গেছে। যদি পেয়ে