পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बनदी a আমার ভাবনা আজি প্রসারিত তব গন্ধ-সনে জনমমরণপরিপার, . ওগো আতসবন, যেথায় আমরাপুরে সুন্দরের দেউলপ্রাঙ্গণে জীবনের নিত্য-আশা। সন্ন্যাসিনী, সন্ধ্যারতিক্ষণে দীপ জ্বালি তার পূর্ণের করিছে সমর্পণ। বহুকাল চলিয়াছে বসন্তের রসের সঞ্চার ওই তব মজায় মজায়, ওগো আহবান । বহুকাল যৌবনের মদোৎফুল্ল পল্লীললনার আকুলিত অলকসজায় জোগালে ভূষণ । শিকড়ের মুষ্টি দিয়া আঁকড়িয়া যে বক্ষ পৃথ্বীর প্রাণরস কর তুমি পান, ওগো আহস্ৰবন, সেথা। আমি গেঁথে আছি। দুদিনের কুটির মৃত্তিরতোমার উৎসবে আমি আজি গাব এক রজনীর পথ-চলা গান, কালি তার হবে সমাপন । [ শান্তিনিকেতন ] ৫ ফাল্গুন ১৩৩৪ নীলমণিলতা শান্তিনিকেতন উত্তরায়ণের একটি কোণের বাড়িতে আমার বাসা ছিল । এই বাসার অঙ্গনে আমার পরলোকগত বন্ধু পিয়ার্সন একটি বিদেশী গাছের চারা রোপণ করেছিলেন । অনেককাল অপেক্ষার পরে নীলফুলের স্তবকে স্তবকে একদিন সে আপনার অজস্র পরিচয় অবারিত করলে । নীল রঙে আমার গভীর আনন্দ, তাই এই ফুলের বাণী আমার যাতায়াতের পথে প্রতিদিন আমাকে ডাক দিয়ে বারে বারে স্তব্ধ করেছে । আমার দিক থেকে কবিরও কিছু বলবার ইচ্ছে হত, কিন্তু নাম না পেলে সম্ভাষণ করা চলে না । তাই লতাটির নাম দিয়েছি। নীলমণিলতা । উপযুক্ত অনুষ্ঠানের দ্বারা সেই নামকরণটি পাকা করবার জন্যে এই কবিতা । নীলমণি ফুল যেখানে চোখের সামনে ফোটে সেখানে নামের দরকার হয় নি, কিন্তু একদা অবসানপ্ৰায় বসন্তের দিনে দূরে ছিলুম, সেদিন রূপের স্মৃতি নামের দাবি করলে । ভক্ত ১০১ নামে দেবতাকে ডাকে, সে শুধু বিরহের আকাশকে পরিপূর্ণ করবার জন্যে । ফাল্গুনমাধুরী তার চরণের মঞ্জীরে মঞ্জীরে নীলমণিমঞ্জরির গুঞ্জন বাজায়ে দিল কি রে । আকাশ যে মৌনভার বাহিতে পারে না। আর, নীলিমাবিন্যায় শূন্যে উচ্ছলে অনন্ত ব্যাকুলতা, তারি ধারা পুস্পপাত্রে ভরি নিল নীলমণিলতা । Ե-1|Գ