S8 o রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী তখন পৃথিবীর এই ধূসর ছেলেমানুষির উপরে দেখেছি সেই মহিমা যা একদিন পড়েছে আমার চোখে দুর্লভ দিনাবসানে - রোহিত সমুদ্রের তীরে তীরে জনশূন্য তরুহীন পর্বতের রক্তবর্ণশিখরশ্রেণীতে, রুষ্টিরুদ্রের প্রলয়ভুকুঞ্চিনের মতো । এই পথে ধেয়ে এসেছে কালবৈশাখীর বড় গেরুয়া পতাকা উড়িয়ে ঘোড়সওয়ার বগিসৈন্যের মতোকঁপিয়ে দিয়েছে শাল-সেগুনকে, নুইয়ে দিয়েছে ঝাউয়ের মাথা, হায়-হায় রব তুলেছে বঁাশের বনে, কলাবাগানে করেছে। দুঃশাসনের দৌরাত্ম্য । ক্ৰন্দিত আকাশের নীচে ওই ধুসর বন্ধুর কাকরের ভূপগুলো দেখে মনে হয়েছে লাল সমুদ্রে তুফান উঠিল, ছিটকে পড়ছে তার শীকরবিন্দু। এসেছিলেম। বালককালে । verfor SSRPSKRIGS বিীর বির ঝর্নার ধারায় রচনা করেছি। মন-গড়া রহস্যকথা, খেলেছি নুড়ি সাজিয়ে নির্জন দুপুর বেলায় আপন-মনে একলা । তার পরে অনেক দিন হল, পাথরের উপর নিবারের মতো আমার উপর দিয়ে বয়ে গেল অনেক বৎসর । রচনা করতে বসেছি। একটা কাজের রাপ ওই আকাশের তলায় ভাঙামাটির ধারে, ছেলেবেলায়। যেমন রচনা করেছি নুড়ির দুর্গ ! এই শালবন, এই একলা-মেজাজের তালগাছ, ওই সবুজ মাঠের সঙ্গে রাঙামাটির মিতালি, এর পানে অনেক দিন যাদের সঙ্গে দৃষ্টি মিলিয়েছি, যারা মন মিলিয়েছিল এখানকার বাদল-দিনে আর আমার বাদল-গানে, তারা কেউ আছে। কেউ গেল চলে ।
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৫৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।