পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSo রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী ছেলেটার নতুন নতুন দৌরাত্মি এই গয়ালানী মাসির’পরে । তার বাধা গোরুর দড়ি দেয় কেটে, তার ভাড় রাখে লুকিয়ে, খয়েরের রঙ লাগিয়ে দেয়। তার কাপড়ে । “দেখি-না। কী হয় তারই বিবিধ-রকম পরীক্ষা । তার উপদ্রবে। গয়লানীর স্নেহ ওঠে ঢেউ খেলিয়ে । তার হয়ে কেউ শাসন করতে এলে সে পক্ষ নেয়। ওই ছেলেটারই । অম্বিকে মাস্টার আমার কাছে দুঃখ করে গেল, “শিশুপাঠে আপনার লেখা কবিতাগুলো পড়তে ওর মন লাগে না কিছুতেই, এমন নিরেট বুদ্ধি । - পাতাগুলো দুষ্টুমি করে কেটে রেখে দেয়, বলে ইদুরে কেটেছে । এতবড়ো বান্দর ।” আমি বললুম, “সেক্রেটি আমারই, থাকত ওর নিজের জগতের কবি তা হলে গুবরে পোকা এত স্পষ্ট হত তার ছন্দে ও ছাড়তে পারত না । কোনোদিন ব্যাঙের খাটি কথাটি কি পেরেছি। লিখতে, আর সেই নেড়ি কুকুরের ট্রাজেডি ।” Sz- SFS S -2'SI সহযাত্রী সুশ্ৰী নয় এমন লোকের অভাব নেই জগতে এ মানুষটি তার চেয়েও বেশি, এ অদ্ভুত । খাপছাড়া টাক সামনের মাথায়, ফুরফুরে চুল কোথাও সাদা কোথাও কালো । ছোটো ছোটো দুই চোখে নেই রোওয়া, আলু কুঁচকিয়ে কী দেখে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে, তার দেখাটা যেন চোখের উদ্ভাবৃত্তি । যেমন উচু তেমনি চওড়া নাকাটা, সমস্ত মুখের সে বারো-আনি অংশীদার । কপালটা মন্ততার উত্তর দিগন্তে নেই চুল, দক্ষিণ দিগন্তে নেই ভুরু । দাড়ি-গোফ-কামানো মুখে অনাবৃত হয়েছে বিধাতার শিল্পরচনার অবহেলা ।