পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রক্তকরবী \Obr নন্দিনী । (জানলায় ঘা দিয়ে) সময় হয়েছে, দরজা খোলো । নেপথ্যে । আবার এসেছি অসময়ে । এখনই যাও, যাও তুমি । নন্দিনী । অপেক্ষা করবার সময় নেই, শুনতেই হবে। আমার কথা ! নেপথ্যে । কী বলবার আছে বাইরে থেকে বলে চলে যাও । নন্দিনী । বাইরে থেকে কথার সুর তোমার কানে পীেছয় না । নেপথ্যে । আজ ধ্বজাপুজা, আমার মন বিক্ষিপ্ত কোরো না । পূজার ব্যাঘাত হবে। যাও, যাও ! এখনই RN3 | নন্দিনী । আমার ভয় ঘুচে গেছে। অমন করে তাড়াতে পারবে না। মারি সেও ভালো, দরজা না খুলিয়ে क७द की | নেপথ্যে । রঞ্জনকে চাও বুঝি ? সর্দারকে বলে দিয়েছি, এখনই তাকে এনে দেবে । পুজোয় যাবার সময় দরজায় দাড়িয়ে থেকে না । বিপদ ঘটবে। নন্দিনী । দেবতার সময়ের অভাব নেই, পুজোর জন্যে যুগযুগান্তর অপেক্ষা করতে পারেন । মানুষের দুঃখ মানুষের নাগাল চায় যে । তার সময় অল্প । নেপথ্যে । আমি ক্লান্ত, ভারি ক্লান্ত । ধ্বজাপুজায় অবসাদ ঘুচিয়ে আসব। আমাকে দুর্বল কোরো না । এখন বাধা দিলে রথের চাকায় ওঁড়িয়ে যাবে। নন্দিনী । বুকের উপর দিয়ে চাকা চলে যাক, নড়ব না। নেপথ্যে । নন্দিনী, আমার কাছ থেকে তুমি প্রশ্ৰয় পেয়েছ, তাই ভয় কর না। আজ ভয় করতেই হবে । নন্দিনী । আমি চাই, সবাইকে যেমন ভয় দেখিয়ে বেড়াও, আমাকেও তেমনি ভয় দেখাবে । তোমার প্রশ্রয়কে ঘূণা করি । নেপথ্যে । ঘূণা কর ? স্পর্ধা চুৰ্ণ করব । তোমাকে আমার পরিচয় দেবার সময় এসেছে। নন্দিনী । পরিচয়ের অপেক্ষাতেই আছি, খোলো দ্বার । (দ্বার উদঘাটন) ওকি ! ঐ কে পড়ে। রঞ্জনের মতো দেখছি যেন ! 臣 রাজা । কী বললে । রঞ্জন ? কখনোই রঞ্জন নয় । নন্দিনী । ই গো, এই তো আমার রঞ্জন । রাজা । ও কেন বললে না। ওর নাম । কেন এমন স্পর্ধা করে এল । নন্দিনী । জাগো রঞ্জন, আমি এসেছি তোমার সখী । রাজা, ও জাগে না কেন । রাজা । ঠকিয়েছে। আমাকে ঠকিয়েছে এরা। সর্বনাশ ! আমার নিজের যন্ত্র আমাকে মানছে না। ডাক তোরা, সর্দারকে ডেকে আনি, বেঁধে নিয়ে আয় তাকে । নন্দিনী । রাজা, রঞ্জনকে জাগিয়ে দাও, সবাই বলে তুমি জাদু জান, ওকে জাগিয়ে দাও । রাজা । আমি যমের কাছে জাদু শিখেছি, জাগাতে পারি নে। জাগরণ ঘুচিয়ে দিতেই পারি। নন্দিনী । তবে আমাকে ঐ ঘুমেই ঘুম পাড়াও । আমি সইতে পারছি নে। কেন এমন সর্বনাশ করলে ! রাজা । আমি যৌবনকে মেরেছি- এতদিন ধরে আমি সমস্ত শক্তি নিয়ে কেবল যৌবনকে মেরেছি। মর্যা-যৌবনের অভিশাপ আমাকে লেগেছে । नन्नैिी || ७ दि उद्भ नो वव्न नि । সুমন করে বলেছিল, সে আমি সইতে পারি নি। হঠাৎ আমার নাটতে নাটীতে যেন আগুন জ্বলে নন্দিনী । (রজনের প্রতি) বীর আমার, নীলকণ্ঠপাখির পালক এই পরিয়ে দিলুম তোমার চূড়ায়। তোমার জয়যাত্রা আজ হতে শুরু হয়েছে। সেই যাত্রার বাহন আমি - আহা, এই-ষে ওর হাতে সেই আমার রক্তকরবীর মঞ্জরি। তবে তো কিশোর ওকে দেখেছিল। সে কোথায় গেল। রাজা, কোথায় সেই বালক । রাজা । কোন বালক ।