পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিরকুমার-সভা 8oዓ অক্ষয় । তা, মা, ওরা যদি রাগ করে চলে যায় তা হলে দুটি পাত্ৰ এখনই হাতছাড়া হবে । তাই ওরা যা বলছে তাই শুনতে হচ্ছে । (পুরবালার প্রতি) আমাকে সুদ্ধ মদ ধরাবে দেখছি। পুরবালা । বিদায় করো, বিদায় করো, এখনই বিদায় করো। জগত্তারিণী । (ব্যস্ত হইয়া) বাবা, এখানে মুগি খাওয়া টাওয়া হবে না, তুমি ওদের বিদায় করে দাও । আমার ঘাট হয়েছিল। আমি রসিককাকাকে পাত্ৰ সন্ধান করতে দিয়েছিলুম। তার দ্বারা যদি কোনো কাজ PN3श यो I [রমণীগণের প্রস্থান অক্ষয় ঘরে আসিয়া দেখেন, মৃত্যুঞ্জয় পলায়নের উপক্ৰম করিতেছে এবং দারুকেশ্বর হাত ধরিয়া তাহাকে টানাটানি করিয়া রাখিবার চেষ্টা করিতেছে অক্ষয়ের অবর্তমানে মৃত্যুঞ্জয় অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করিয়া সন্ত্রস্ত হইয়া উঠিয়াছে মৃত্যুঞ্জয় । (অক্ষয়কে রাগের স্বরে) না মশায়, আমি ক্রিস্টান হতে পারব না। আমার বিয়ে করে কাজ নেই । অক্ষয় । তা মশায়, আপনাকে কে পায়ে ধরাধরি করছে । দারুকেশ্বর । আমি রাজি আছি মশায় । অক্ষয় । রাজি থাকেন তো গিৰ্জেয় যান মশায় । আমার সাত পুরুষে ক্রিশচন করা ব্যাবসা নয় । দারুকেশ্বর। । ঐ-যে কোন বিশ্বাসের কথা বললেন— অক্ষয় । তিনি টেরিটির বাজারে থাকেন, তার ঠিকানা লিখে দিচ্ছি। দারুকেশ্বর । আর বিবাহটা ? অক্ষয় । সেটা এ বংশে নয় ! দারুকেশ্বর । তা হলে এতক্ষণ পরিহাস করছিলেন মশায় ? খাওয়াটাও কি অক্ষয় । সেটাও এ ঘরে নয় । দারুকেশ্বর । অন্তত হোটেলে ? অক্ষয় । সে কথা ভালো । টাকার ব্যাগ হইতে গুটিকয়েক টাকা বাহির করিয়া দুটিকে বিদায় করিয়া দিলেন নৃপর হাত ধরিয়া টানিয়া নীরবালা বসন্তকালের দমকা হাওয়ার মতো ঘরের মধ্যে আসিয়া প্রবেশ করিল। নীরবালা । মুখুজেমশায়, দিদি তা দুটির কোনোটিকেই বাদ দিতে চান-না । নৃপবালা । (নীরার কপোলে গুটি দুই-তিন অঙ্গুলির আঘাত করিয়া) ফের মিথ্যে কথা বলছিস ! অক্ষয় । ব্যস্ত হােস নে ভাই, সত্যমিথ্যের প্রভেদ আমি একটু-একটু বুঝতে পারি। নীরবালা । আচ্ছা মুখুজেমশায়, এ দুটি কি রসিকদাদার রসিকতা না আমাদের সেজদিদিরই ফাড়া ? অক্ষয় । বন্দুকের সকল গুলিই কি লক্ষ্যে গিয়ে লাগে। প্রজাপতি টার্গেট প্র্যাকটিস করছিলেন, এ দুটো ফসকে গেল। প্ৰথম প্রথম এমন গোটাকতক হয়েই থাকে । এই হতভাগ্য ধরা পড়বার পূর্বে তোমার দিদির ছিপে অনেক জলচর ঠোকর দিয়ে গিয়েছিল, বড়শি বিধল কেবল আমারই কপালে । [কপালে চপেটাঘাত নৃপবালা। এখন থেকে রোজই প্রজাপতির প্র্যাকটিস চলবে নাকি মুখুজেমশায়। তা হলে তো আর : 5ों यांश कीं । s নীরবালা । কেন ভাই, দুঃখ করিস। রোজই কি ফাঁসকাবে। একটা-না-একটা এসে ঠিক-মতন পৌছবে । রাসিকের প্রবেশ নীরবালা । রসিকদাদা, এবার থেকে আমরাও তোমার জন্যে পাত্রী জোটাচ্ছি। রসিক । সে তো সুখের বিষয় ।