পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Գեր ब्रौद्ध-द्वा5नावी নির্মলা । অবলাকান্তবাবু আমাকে কতকটা সাহায্য করবেন বলেছেন— আমি তাকে রোগীশুশ্ৰুষা সম্বন্ধে সেই ইংরেজি বইটা দিয়েছি, তিনি একটা অধ্যায় আজ লিখে পাঠাবেন বলেছেন । বোধ হয় এখনই পাওয়া যাবে, তাই আমি অপেক্ষা করে বসে আছি। চন্দ্রবাবু। ঐ ছেলেটি বড়ো ভালো- ? নির্মলা । খুব ভালো- চমৎকার চন্দ্ৰবাবু। এমন অধ্যবসায়, এমন কাৰ্য্যতৎপরতা নির্মলা । আর, এমন সুন্দর নম্রস্বভাব চন্দ্ৰবাবু। ভালো প্ৰস্তাবমাত্রেই তার উৎসাহ দেখে আমি আশ্চর্য হয়েছি। নির্মলা । তা ছাড়া, তাকে দেখিবামাত্র তার মনের মাধুৰ্য মুখে এবং চেহারায় কেমন স্পষ্ট বোঝা যায় । চন্দ্ৰবাবু। এত অল্প কালের মধ্যেই যে কারো প্রতি এত গভীর স্নেহ জন্মাতে পারে তা আমি কখনো মনে করি নি । আমার ইচ্ছা করে, ঐ ছেলেটিকে নিজের কাছে রেখে ওর সকলপ্রকার লেখাপড়ায় এবং কাজে সহায়তা করি । নির্মলা । তা হলে আমারও ভারি উপকার হয়, অনেক কাজ করতে পারি। আচ্ছা, এরকম প্ৰস্তাব করে একবার দেখোই-না- ঐ-যে বেহারিা আসছে। বোধ হয় তিনি লেখাটা পাঠিয়ে দিয়েছেন । রামদীন, চিঠি আছে ? এই দিকে নিয়ে আয় । বেহারিার প্রবেশ ও চন্দ্রবাবুর হাতে চিঠি-প্ৰদান মামা, সেই প্ৰবন্ধটা নিশ্চয় তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, ওটা আমাকে দাও । চন্দ্ৰবাবু। না ফেনি, এটা আমার চিঠি । নির্মলা । তোমার চিঠি ! অবলাকান্তবাবু বুঝি তোমাকেই লিখেছেন ? কী লিখেছেন। চন্দ্রর্যাবু। না, এটা পূর্ণর লেখা । নির্মলা । পূৰ্ণবাবুর লেখা ? ও৪— চন্দ্ৰবাবু। পূর্ণ লিখছেন- “গুরুদেব, আপনার চরিত্র মহৎ, মনের বল অসামান্য ; আপনার মতো বলিষ্ঠপ্ৰকৃতি লোকেই মানুষের দুর্বলতা ক্ষমার চক্ষে দেখিতে পারেন ইহাই মনে করিয়া অদ্য এই চিঠিখানি আপনাকে লিখিতে সাহসী হইতেছি ।” নির্মলা । হয়েছে কী । বোধ হয় পূৰ্ণবাবু চিরকুমার-সভা ছেড়ে দেবেন, তাই এত ভূমিকা করছেন। লক্ষ্য করে দেখেছ বোধ হয়, পূৰ্ণবাবু আজকাল কুমার-সভার কোনো কাজই করে উঠতে পারেন না । চন্দ্ৰবাবু। ‘দেব, আপনি যে আদর্শ আমাদের সম্মুখে ধরিয়াছেন তাহা অত্যুচ্চ, যে উদ্দেশ্য আমাদের মস্তকে স্থাপন করিয়াছেন তাহা গুরুভার— সে আদর্শ এবং সেই উদ্দেশ্যের প্রতি এক মুহুর্তের জন্য ভক্তির অভাব হয় নাই, কিন্তু মাঝে মাঝে শক্তির দৈন্য অনুভব করিয়া থাকি তাহা চরণসমীপে সবিনয়ে স্বীকার করিতেছি ।” নির্মলা । আমার বোধ হয়, সকল বড়ো কাজেই মানুষ মাঝে মাঝে আপনার অক্ষমতা অনুভব করে হতাশ হয়ে পড়ে, শ্ৰান্ত মন এক-একবার বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়, কিন্তু সে কি বরাবর থাকে । চন্দ্ৰবাবু। সভা হইতে গৃহে ফিরিয়া আসিয়া যখন কার্যে হাত দিতে যাই তখন সহসা নিজেকে একক মনে হয়, উৎসাহ যেন আশ্রয়হীন লতার মতো লুষ্ঠিত হইয়া পড়িতে চাহে।”— নিৰ্মল, আমরা তো ঠিক এই কথাই বলছিলেম । নির্মলা। পূৰ্ণবাবু যা লিখেছেন সেটা সত্য- মানুষের সঙ্গ না হলে কেবলমাত্র সংকল্প নিয়ে উৎসাহ জাগিয়ে রাখা শক্ত । চন্দ্ৰবাবু। “আমার ধৃষ্টতা মার্জনা করিবেন, কিন্তু অনেক চিন্তা করিয়া এ কথা স্থির বুঝিয়েছি, কুমারব্ৰত