পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নটীর পূজা > 44 রত্নাবলী। স্বর্গে যদি না যাই সেও ভালো কিন্তু তোমার উপদেশের জোরে যেতে চাইনে। গণেশের ইদুরের কৃপায় সিদ্ধিলাভ করতে আমার উৎসাহ নেই, বরঞ্চ * যমরাজের মহিষটাকে মানতে রাজি আছি। | নন্দ । রত্ন তোমার বাহন তো তৈরিই আছে,— লক্ষ্মীর পেচা । দেখো তো অজিতা, শ্ৰীমতীকে নিয়ে কেন বিদ্রুপ। ও তো উপদেশ দিতে আসে না । বাসবী। ওর চুপ করে থাকাই তো রাণীকৃত উপদেশ। ওই দেখো না, চুপি চুপি হাসছে। ওটা কি উপদেশ হল না ? রত্নাবলী। মহৎ উপদেশ। অর্থাৎ কিনা, মধুরের দ্বারা কটুকে জয় করবে, হাস্তের দ্বারা ভাষাকে । 釁 বাসবী। একটু ঝগড় কর না কেন.শ্ৰীমতী ? এত মধুর কি সস্থ হয় ? মানুষকে লজ্জা দেওয়ার চেয়ে মানুষকে রাগিয়ে দেওয়া যে ঢের ভালো । । শ্ৰীমতী । ভিতরে তেমন ভালো যদি হতেম বাইরে মন্দর ভান করলে সেটা গায়ে লাগত না । কলঙ্কের ভান করা চাদকেই শোভা পায় । কিন্তু অমাবস্তা ! সে যদি মেঘের মুখোশ পরে ? অজিতা । ওই দেখো, গ্রামের মেয়েটি অবাক হয়ে ভাবছে, রাজবাড়ির মেয়েগুলোর রসনায় রস নেই কেবল ধারই আছে। কী তোমার নাম ভুলে গেছি। মালতী । মালতী । অজিতা , কী ভাবছিলে বলে না । মালতী। দিদিকে ভালোবেসেছি, তাই ব্যথা লাগছিল। অজিতা । আমরা যাকে ভালোবাসি তাকেই ব্যথা দেবার ছল করি। রাজবাড়ির অলংকারশাস্ত্রের এই নিয়ম। মনে রেখে । ভদ্রা । মালতী, কী একটা কথা ষেন বলতে যাচ্ছিলে। বলেই ফেলে না। আমাদের তুমি কী ভাব জানতে ভারি কৌতুহল হয়। মালতী। আমি বলতে চাচ্ছিলেম, “ই গা, তোমরা নিজের কথা শুনতেই এত ভালোবাস, গান শোনবার সময় বয়ে যায়।” {} সকলের উচ্চহাস্ত বাসবী। ই গা, ই গা । রাজবাড়ির ব্যাকরণচঞ্চুকে ডাকে, তার শিক্ষা সম্বোধনের শেষ পর্যন্ত পৌছয়নি। রত্নাবলী। ই গা বাসবী, ই গা রাজকুলমুকুটমণিমালিকা ।