পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ ૨૭૭ उिँौग्न পরিচ্ছেদ একটি নোলকপরা অশ্রভর। ছোটোখাটো মেয়ের সহিত নিবারণের বিবাহু হুইল, তাহার নাম শৈলবালা । নিবারণ ভাবিল, নামটি বড়ে মিষ্ট এবং মুখখানিও বেশ ঢলোচলে । তাহার ভাবখানা, তাহার চেহারাখানি, তাহার চলাফেরা একটু বিশেষ মনোযোগ করিয়া চাহিয়া দেখিতে ইচ্ছা করে, কিন্তু সে আর কিছুতেই হইয় উঠে না । উলটিয়া এমন ভাব দেখাইতে হয় যে, ওই তো একফোটা মেয়ে, উহাকে লইয়া তো বিষম বিপদে পড়িলাম, কোনোমতে পাশ কাটাইয়া আমার বয়সোচিত কর্তব্যক্ষেত্রের মধ্যে গিয়া পড়িলে যেন পরিত্রাণ পাওয়া যায় । হরমুন্দর নিবারণের এই বিষম বিপদগ্ৰস্ত ভাব দেখিয়া মনে মনে বড়ো আমোদ বোধ করিত। এক একদিন হাত চাপিয়া ধরিয়া বলিত, “আহা, পালাও কোথায় । ওইটুকু মেয়ে, ও তো আর তোমাকে ধাইয়া ফেলিবে না।” --- নিবারণ দ্বিগুণ শশব্যস্ত ভাব ধারণ করিয়া বলিত, “আরে রসো রসো, আমার একটু বিশেষ কাজ আছে।” বলিয়া যেন পালাইবার পথ পাইত না । হুরসুন্দরী হাসিয়া দ্বার আটক করিয়া বলিত, আজ ফাকি দিতে পরিবে না। অবশেষে নিবারণ নিতাস্তই নিরুপায় হইয়া কাতরভাবে বসিয়া পড়িত । হরমুন্দরী তাহার কানের কাছে বলিত, “আহা পরের মেয়েকে ঘরে আনিয়া আমন হতশ্রদ্ধা করিতে নাই ।” এই বলিয়া শৈলবালাকে ধরিয়া নিবারণের বাম পাশে বসাইয়া দিত এবং জোর করিয়া ঘোমটা খুলিয়া ও চিবুক ধরিয়া তাহার আনত মুখ তুলিয়া নিবারণকে বলিত, "আহ কেমন চাদের মতে মুখখানি দেখে দেখি।” কোনোদিন বা উভয়কে ঘরে বসাইয়া কাজ আছে বলিয়া উঠিয়া যাইত এবং বাহির হইতে বানাং করিয়া দরজা বন্ধ করিয়া দিত। নিবারণ নিশ্চয় জানিত দুটি কৌতুহলী চক্ষু কোনো-না-কোনো ছিত্রে সংলগ্ন হুইয়া আছে—অতিশয় উদাসীনভাবে পাশ ফিরিয়া নিদ্রার উপক্রম করিত, শৈলবালা ঘোমটা টানিয়া গুটিমুটি মারিয়া মুখ ফিরাইয়া একটা কোণের মধ্যে মিলাইয়া থাকিত । অবশেষে হরমুন্দর নিতান্ত না পারিয়া হাল ছাড়িয়া দিল, কিন্তু খুব বেশি দুঃখিত हऐण ब ।। ... হরমুন্দরীর যখন হাল ছাড়িল, তখন স্বয়ং নিবারণ হাল ধরিল। এ বড়ো কৌতুহল,