পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৭e রবীন্দ্র-রচনাবলী মাঝখানে বসিয়া আছে—কিন্তু তবু মধ্যে একটা বিচ্ছেদ। ঠিক যেন একটি ক্ষুদ্র উজ্জল সুন্দর নিষ্ঠুর ছুরি আসিয়া একটি হৃৎপিণ্ডের দক্ষিণ এবং বাম অংশের মাঝখানে বেদনাপূর্ণ বিদারণরেখা টানিয়া দিয়া গেছে। একদিন গভীর রাত্রে সমস্ত শহর যখন নিদ্রিত, নিবারণ ধীরে ধীরে হরমুন্দরীর নিভৃত শয়নকক্ষে প্রবেশ করিল। নীরবে সেই পুরাতন নিয়মমতে সেই পুরাতন শষ্যার দক্ষিণ অংশ গ্রহণ করিয়া শয়ন করিল। কিন্তু এবার তাহার সেই চির অধিকারের মধ্যে চোরের মতো প্রবেশ করিল। হরমুন্দরীও একটি কথা বলিল না, নিবারণও একটি কথা বলিল না। উহার পূর্বে যেরূপ পাশাপাশি শয়ন করিত এখনও সেইরূপ পাশাপাশি গুইল, কিন্তু ঠিক মাঝখানে একটি মৃত বালিকা শুইয়া রহিল, তাহাকে কেহ লঙ্ঘন করিতে পারিল না । ४छार्छ, >\Фо е অসম্ভব কথা এক যে ছিল রাজা । g তখন ইহার বেশি কিছু জানিবার আবশ্বক ছিল না। কোথাকার রাজা, রাজার নাম কী, এ সকল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিয়া গল্পের প্রবাহ রোধ করিতাম না । রাজার নাম শিলাদিত কি শালিবাহন, কাশী কাঞ্চি কনোজ কোশল অঙ্গ বঙ্গ কলিদের মধ্যে ঠিক কোনখানটিতে র্তাহার রাজত্ব, এ সকল ইতিহাস-ভূগোলের তর্ক আমাদের কাছে নিতান্তই তুচ্ছ ছিল,—আসল যে-কথাটি শুনিলে অস্তর পুলকিত হইয়া উঠিত এবং সমস্ত হৃদয় একমুহূর্তের মধ্যে বিদ্যুদ্বেগে চুম্বকের মতো আকৃষ্ট হইত সেটি হইতেছে— এক যে ছিল রাজা । এখনকার পাঠক যেন একেবারে কোমর বাধিয়া বসে। গোড়াতেই ধরিয়া লয় লেখক মিথ্যা কথা বলিতেছে। সেইজন্য অত্যন্ত সেয়ানার মতে মুখ করিয়া জিজ্ঞাসা করে, “লেখকমহাশয়, তুমি যে বলিতেছ এক যে ছিল রাজা, আচ্ছ বলে দেখি কে ছিল সে রাজা ।” т লেখকেরাও সেয়ানা হইয়া উঠিয়াছে ; তাহারা প্রকাও প্রত্নতত্ত্ব-পণ্ডিতের মতো মুখমণ্ডল চতুগুৰ্ণ মণ্ডলাকার করিয়া বলে, “এক যে ছিল রাজা, তাহার নাম ছিল অজাতশত্রু *