পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

રન્સ রবীন্দ্র-রচনাবলী কিছুতেই তাহার পা ছাড়িল না, কছিল, "দাদাঠাকুর, এখন আমার বউকে বাচাইবার কী উপায় করি /* 刺 মামলামোকদ্দমার পরামর্শে রামলোচন সমস্ত গ্রামের প্রধান মন্ত্রী ছিলেন। তিনি একটু ভাবিয়া বলিলেন, “দেখ ইহার এক উপায় আছে। তুই এখনই থানায় ছটিয়া ষা—বলগে, তোর বড়ো ভাই দুখি সন্ধ্যাবেলায় ঘরে আসিয়া ভাত চাহিয়াছিল, ভাত প্রস্তুত ছিল না বলিয়া স্ত্রীর মাথায় দল বসাইরা দিয়াছে। আমি নিশ্চয় বলিতেছি এ-কথা বলিলে ছড়িটা বঁচিয়া যাইবে।” 噸 ছিদামের কণ্ঠ শুষ্ক হইয়া আসিল, উঠিয়া কহিল, “ঠাকুর, বউ গেলে বউ পাইব, কিন্তু আমার ভাই ফাসি গেলে আর তো ভাই পাইব না।” কিন্তু যখন নিজের স্ত্রীর নামে দোষারোপ করিয়াছিল তখন এ সকল কথা ভাবে নাই। তাড়াতাড়িতে একটা কাজ করিয়া ফেলিয়াছে, এখন অলক্ষিতভাবে মন আপনার পক্ষে যুক্তি এবং প্রবোধ সঞ্চয় করিতেছে । চক্রবর্তীও কথাটা যুক্তিসংগত বোধ করিলেন, কহিলেন, “তবে যেমনটি ঘটিয়াছে তাই বলিস, সকল দিক রক্ষা করা অসম্ভব ।” বলিয়া রামলোচন অবিলম্বে প্রস্থান করিল এবং দেখিতে দেখিতে গ্রামে রাষ্ট্র হইল যে, কুরিদের বাড়ির চন্দরা রাগারগি করিয়া তাহার বড়ো জায়ের মাথায় দা বসাইয়া দিয়াছে। বাধ ভাঙিলে যেমন জল আসে গ্রামের মধ্যে তেমনি হুহু: শব্দে পুলিস আসিয়া পড়িল ; অপরাধী এবং নিরপরাধী সকলেই বিষম উদ্বিগ্ন হইয়া উঠিল । দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ছিদাম ভাবিল, যে পথ কাটিয়া ফেলিয়াছে সেই পথেই চলিতে হইবে। সে চক্রবর্তীর কাছে নিজমুখে এক কথা বলিয়া ফেলিয়াছে সে-কথা গাম্বুদ্ধ রাষ্ট্র হইয়া পড়িয়াছে, এখন আবার আর-একটা কিছু প্রকাশ হুইয়া পড়িলে কী জানি কী হইতে কী হইয়া পড়িবে সে নিজেই কিছু ভাবিয়া পাইল না । মনে করিল কোনোমতে সে-কথাটা রক্ষা করিয়া তাহার সহিত আর পাচটা গল্প জুড়িয়া স্ত্রীকে রক্ষা করা ছাড়া আর কোনো পথ নাই । ছিদাম তাহার স্ত্রী চন্দরাকে অপরাধ নিজ স্কন্ধে লইবার জন্ত অনুরোধ করিল। সে তো একেবারে বজ্ৰাহত হইয়া গেল। ছিদাম তাহাকে আশ্বাস দিয়া কহিল, “যাহা