পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী وان مbجد কোনো বচসা হইয়াছিল ? নী । সে তোমাকে প্রথমে মারিতে আসিয়াছিল ? নী । তোমার প্রতি কোনো অত্যাচার করিয়াছিল ? न1 ।। এইরূপ উত্তর গুনিয়া সকলে অবাক হইয়া গেল । ছিদাম তো একেবারে অস্থির হইয়া উঠিল । কহিল, “উনি ঠিক কথা বলিতেছেন না. বড়োবউ প্রথমে—” দারোগ খুব এক তাড়া দিয়া তাহাকে থামাইয়া দিল। অবশেষে তাহাকে বিধিমতে জেরা করিয়া বার বার সে-ই একই উত্তর পাইল—বড়োবউয়ের দিক হইতে কোনোরূপ আক্রমণ চন্দরা কিছুতেই স্বীকার করিল না । এমন একগুঁয়ে মেয়েও তো দেখা যায় না। একেবারে প্রাণপণে ফাসিকাঠের দিকে ঝুঁকিয়াছে, কিছুতেই তাহাকে টানিয়া রাখা যায় না । এ কী নিদারুণ অভিমান । চন্দরা মনে মনে স্বামীকে বলিতেছে, আমি তোমাকে ছাড়িয়া আমার এই নবযৌবন লইয়া ফাসিকাঠকে বরণ করিলাম—আমার ইহজন্মের শেষবন্ধন তাহার সহিত । বন্দিনী হইয়া চন্দর, একটি নিরীহ ক্ষুদ্র চঞ্চল কৌতুকপ্রিয় গ্রামবন্ধু, চিরপরিচিত গ্রামের পথ দিয়া, রথতলা দিয়া, হাটের মধ্য দিয়া, ঘাটের প্রাস্ত দিয়া, মজুমদারদের বাড়ির সম্মুখ দিয়া, পোস্টাপিস এবং ইস্কুলঘরের পাশ্ব দিয়া, সমস্ত পরিচিত লোকের চক্ষের উপর দিয়া কলঙ্কের ছাপ লইয়া চিরকালের মতো গৃহ ছাড়িয়া চলিয়া গেল । একপাল ছেলে পিছন পিছন চলিল এবং গ্রামের মেয়েরা, তাহার সইসাঙতির কেহ কেহ ঘোমটার ফাক দিয়া, কেহ দ্বারের প্রাস্ত হইতে, কেহ বা গাছের আড়ালে দাড়াইয়া পুলিস-চালিত চন্দরাকে দেখিয়া লজ্জায় ঘৃণায় ভয়ে কণ্টকিত হইয়া উঠিল। 颚 ডেপুটি ম্যাজিস্টেটের কাছেও চন্দ্ররা দোষ স্বীকার করিল। এবং খুনের সময় বড়োবউ যে তাহার প্রতি কোনোরূপ অত্যাচার করিয়াছিল তাহা প্রকাশ হইল না। কিন্তু সেদিন ছিদাম সাক্ষ্যস্থলে আসিয়াই একেবারে র্কাদিয়া জোড়হস্তে কহিল, “দোহাই হুজুর, আমার স্ত্রীর কোনো দোষ নাই।” হাকিম ধমক দিয়া তাহার উচ্ছাস নিবারণ করিয়া তাহাকে প্রশ্ন করিতে লাগিলেন, সে একে একে সত্য ঘটনা প্রকাশ করিল। হাকিম তাহার কথা বিশ্বাস করিলেন না। কারণ, প্রধান বিশ্বস্ত ভয়সাক্ষী