পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সঞ্চয় , , HIV জগতের গভীর মাঝখানটতে এই যেখানে সমস্ত একেবারেই সহজ, যেখানে বিশ্বের বিপুল বোঝা আপনার সমস্ত ভার নামাইয়া দিয়াছে, সত্য যেখানে মুন্দর, শক্তি যেখানে প্রেম, সেইখানে একেবারে সহজ হইয়া বসিবার জন্ত আজ নববর্ষের দিনে ডাক আসিল । ষেদিকে প্রয়াস, যেদিকে যুদ্ধ সেই সংসার তো আছেই—কিন্তু সেইখানেই কি দিন খাটয় দিন-মজুরি লইতে হইবে ? সেই খানেই কি চরম দেনাপাওনা ? এই বিপুল হাটের বাহিরে নিখিল ভূবনের নিভৃত ঘরটির মধ্যে একটি জায়গা আছে যেখানে হিসাবকিতাব নাই, যেখানে আপনাকে অনায়াসে সম্পূর্ণ সমর্পণ করিতে পারাই মহত্তম লাভ, যেখানে ফলাফলের তর্ক নাই, বেতন নাই কেবল আনন্দ আছে ; কৰ্মই যেখানে সকলের চেয়ে প্রবল নহে, প্ৰভু যেখানে প্রিয় -সেখানে একবার যাইতে হইবে, একেবারে ঘরের বেশ পরিয়া, হাসিমুখ করিয়া। নহিলে প্রাণপণ চেষ্টায় কেবলই আপনাকে আপনি জীর্ণ করিয়া আর কতদিন এমন করিয়া চলিবে ? নিজের মধ্যে অল্প নাই গো অল্প নাই—অমৃতহস্ত হইতে অন্ন গ্রহণ করিতে হইবে। সে অন্ন উপার্জনের অন্ন নয়, সে প্রেমের অল্প— হাত খালি করিয়া দিয়া অঞ্জলি পাতিয়া চাহিতে পারিলেই হয় । সহজ হইয়া সেইখানে চল—আজ নববর্ষের পাখি সেই ডাক ডাকিতেছে, বেলফুলের গন্ধ সেই সহজ কথাটিকে বাতাসে অষাচিত ছড়াইয়া দিতেছে । নববর্ষ যে সহজ কথাটি জানাইবার জন্য প্রতিবৎসর দেখা দিয়া যায়, রোগের শয্যায় কাজ ছিল না বলিয়া সেই কথাটি আজ স্তব্ধ হইয়া শুনিবার সময় পাইলাম-আজ প্রভাতের আলোকের এই নিমন্ত্রণপত্রটিকে প্রণাম করিয়া মাথায় করিয়া গ্রহণ করি । >\ー)〉? রূপ ও অরূপ জগং বলিয়া আমরা যাহা জানিতেছি সেই জানাটাকে আমাদের দেশে মাস্থা বলে। বস্তুত তাহার মধ্যে যে একটা মায়ার ভাব আছে তাহ কেবল তত্ত্বজ্ঞান বলে না আধুনিক বিজ্ঞানও বলিয়া থাকে। কোনো জিনিস বস্তুত স্থির নাই, তাহার সমস্ত অণু,পরমাণু নিয়ত কম্পমান অথচ জানিবার বেলায় এবং ব্যবহারকালে আমরা তাহাকে স্থির বলিয়াই জানিতেছি। নিবিড়তম বস্তুও জালের মতো ছিদ্রবিশিষ্ট অথচ জানিবার বেলায় তাহাকে আমরা অচ্ছিত্র বলিয়াই জানি। স্ফটিক জিনিসটা যে কঠিন জিনিস তাহা দুর্বোধন একদিন ঠেকিয়া শিখিয়াছিলেন অথচ আলোকের কাছে যেন সে জিনিসটা একেবারে নাই বলিলেই হয়। এদিকে ষে মহাপ্রবল আকর্ষণ স্বৰ্ষ হইতে পৃথিবী ও পৃথিবী হইতে স্বর্ষে