পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭২ o, রবীন্দ্র-রচনাবলী উঠতেছে তাহা নহে। মুর মিলিতেছে না, তাল কাটিয়া যাইতেছে ; এই বেম্বর বেতালকে মুরে তালে সংশোধন করিয়া লইবার দুঃখ অত্যন্ত কঠোর ; সেই কঠোর দুঃখে কতবার তার ছিড়িয়া যায়, আবার তার সারিয়া লইতে হয়। সকলের এক রকমের ভুল নহে, সকলের একজাতীয় বাধা নহে, কাহারও বা মুরে দোষ আছে, কাহারও বা তালে, কেহ বা সুর তাল উভয়েই কাচা ; এইজন্য সাধনা স্বতন্ত্র। কিন্তু লক্ষ্য একই। সকলকেই সেই এক বিশুদ্ধ মুরে যন্ত্র বাধিয়া, এক বিশুদ্ধ রাগিণী আলাপ করিয়া, এক বিশুদ্ধ আনন্দের মধ্যে মুক্তিলাভ করিতে হইবে, যেখানে পিতার সঙ্গে পুত্রের, গুরুর সঙ্গে শিন্যের যন্ত্রে যন্ত্রে কণ্ঠে কণ্ঠে হৃদয়ে হৃদয়ে মিলিয়া গিয়া যোগের সার্থকতা পরিপূর্ণ হইয়া উঠিবে। יש כי9א כל ধর্মশিক্ষা বালকবালিকাদিগকে গোড়া হইতেই ধর্মশিক্ষা কেমন করিয়া দেওয়া যাইতে পারে এ তর্ক আজকাল খ্ৰীস্টান মহাদেশে খুবই প্রবল হইয়া উঠিয়াছে এবং বোধ করি কতকটা একই কারণে এ চিস্ত আমাদের দেশেও জাগ্রত হইবার উপক্রম করিতেছে । ব্ৰাক্ষসমাজে এই ধর্মশিক্ষার কিরূপ আয়োজন হইতে পারে সেই বিষয়ে আলোচনা করিবার জন্য বন্ধুগণ আমাকে অনুরোধ করিয়াছেন। ধৰ্মসম্বন্ধে আমাদের অধিকাংশ লোকের একটা সংকট এই দেখিতে পাই যে, আমাদের একটা মোটামুটি সংস্কার আছে যে, ধর্ম জিনিসটা প্রার্থনীয় অথচ তাহার প্রার্থনাটা আমাদের জীবনে সত্য হইয়া উঠে নাই। এইজন্ত তাহ আমরা চাহিও বটে কিন্তু যতদূর সম্ভব সস্তায় পাইতে চাই—সকল প্রয়োজনের শেষে উদৃত্তটুকু দিয়া কাজ সারিয়া লইবার চেষ্টা করি । সন্তা জিনিস পৃথিবীতে অনেক আছে তাহাদিগকে অল্প চেষ্টাতেই পাওয়া যায় কিন্তু মূল্যবান জিনিস কী করিয়া বিনামূল্যে পাওয়া যাইতে পারে এ কথা যদি কেহ জিজ্ঞাস করিতে আসে তবে বুঝিতে হইবে সে ব্যক্তি সিদ্ধ কাটিবার বা জাল করিবার পরামর্শ চাহে ; সে জানে উপার্জনের বড়ো রাস্তাটা প্রশস্ত এবং সেই বড়ো রাস্তাটা ধরিয়াই জগতের মহাজন্মে চিরকাল মহাজনি করি আসিয়াছেন, কিন্তু সেই রাস্তায় চলিবার মতো সময় দিতে ব8পাথেয় খরচ করিতে সে রাজিনহে। ]