পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সঞ্চয় 4μ z. ૭૧૧ বস্তুত ব্ৰাহ্মসমাজে ধর্মশিক্ষাসম্বন্ধে যে সমস্ত দাড়াইয়াছে তাঁহা এইখানেই। আমরা মহিষের মনকে বাধিব কী দিয়া ?. তাহাকে ব্যাপৃত করিব কিরূপে, তাহাকে আকর্ষণ করিব কী উপায়ে ? যেমন কেবলমাত্র বৃষ্টি বর্ষণ হইলেই তাহাকে সম্পূর্ণ কাজে লাগানে যায় না, তাহাকে ধরিয়া রাখিবার জন্ত নানাপ্রকার পাক ব্যবস্থা থাক চাই তেমনি কেবলমাত্র ধর্মবক্তৃতায় যদি বা ক্ষণকালের জন্য মনকে একটু ভিজায় কিন্তু তাহ গড়াইয়া চলিয়া যায়, মধ্যাহ্নের পিপাসায়, গৃহদাহের ছবিপাকে তাহাকে খুজিয়া পাই না । তা ছাড়া মন জিনিসটা কতকটা জলের মতে, তাহাকে কেবল একদিকে চাপিয়া ধরিলেই ধরা যায় না, তাহাকে সকল দিক দিয়া বিরিয়া ধরিতে হয়। * কিন্তু ব্রাহ্মসমাজে মাহুষের মনকে নানা দিক দিয়া আষ্টেপৃষ্ঠে বাধিয়া ধরিবার বাধ পদ্ধতি নাই। তাই আমরা কেবলই আক্ষেপ করিয়া থাকি ছেলেদের মন ষে আলগা হইয় খসিয়া খসিয়া যাইতেছে। তথাপি এই প্রকার অনির্দিষ্টতার যে অসুবিধা আছে তাহা আমাদিগকে স্বীকার করিয়া লইতেই হুইবে কিন্তু সাম্প্রদায়িক অতি-নির্দিষ্টতার যে সাংঘাতিক অকল্যাণ তাহা স্বীকার করা ব্রাহ্মসমাজের পক্ষে প্রকৃতিবিরুদ্ধ । ব্রাহ্মধর্মের ভিতরকার এই অনির্দিষ্টতাকে যথাসম্ভব দূর করিয়া তাহাকে এক জায়গায় চিরন্তনরূপে স্থির রাখিবার জন্য আজকাল ব্রাহ্মসমাজের কেহ কেহ ব্ৰাহ্মধর্মকে একটি ধর্মতত্ত্ব একটি বিশেষ ফিলজকি বলিতে ইচ্ছা করেন। ইহার মধ্যে কতটুকু দ্বৈত, কতটুকু অদ্বৈত,কতটুকু দ্বৈতাদ্বৈত ; ইহার মধ্যে শংকরের প্রভাব কতটা, কতটা কান্টের, কতটা হেগেল বা গ্রীনের তাহা একেবারে পাকা করিয়া একটা কোনো বিশেষ তত্ত্বকেই চিরকালের মতো ব্রাহ্মধর্ম নাম দিয়া সমাপ্ত করিয়া দিবার জন্ত র্তাহার উদ্যত হইয়াছেন । বস্তুত ব্রাহ্মসমাজের প্রতি র্যাহাদের শ্রদ্ধা নাই তাহার। অনেকেই এই কথা বলিয়াই ব্রাহ্মধর্মকে নিন্দা করিয়াছেন যে, উহা ধৰ্মই নহে উহা একটা ফিলজফি মাত্র ; ইহার সেই কলম্বকেই গৌরব বলিয়া বরণ করিয়া লইতে চাহেন। * অথচ ইহা আমরা স্পষ্টই প্রত্যক্ষ করিয়াছি যে, ব্রাহ্মধর্ম অন্তান্ত বিশ্বজনীন ধর্মেরই ন্যায় ভক্তের জীবনকে আশ্রয় করিয়াই ইতিহাসে অবতীর্ণ হইয়াছে। ইহা কোনো ধর্মবিদ্যালয়ের টেক্স্টবুককমিটির সংকলিত সামগ্ৰী নহে এবং ইহা গ্রন্থের পরিচ্ছেদে পরিচ্ছেদে পরিচ্ছিন্ন হইয়া কোনো দপ্তরির হাতে মজবুত করিয়া বাধাই হইয়া যায় নাই। যাহা জীবনের সামগ্ৰী তাহ বাড়িবে, তাহ চলিবে। একটা পাথরকে দেখাইয় বলিতে পার ইহাকে যেমনটি দেখিতেছ ইহা তেমনই কিন্তু একটা বীজ সম্বন্ধে সে কথা খাটে না। তাহার মধ্যে এই একটি আশ্চর্য রহস্ত আছে যে, সে যেমনট সে তাহার চেয়ে অনেক বড়ে । এই রহস্তকে যদি অনির্দিষ্টত বলিয়া নিন্দ কয়, তবে ইহাকে . + هوا8 سعb«