পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিচয় # 886: প্রকাশ পাইতেছে যে, স্পষ্টই বুঝা যায় যে তাহ একটা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে প্রাস, তাহা উজানস্রোতে গুণটানা, এইজন্ত গুণবন্ধন অনেকগুলি এবং কঠিন টানের বিরামমাত্র নাই। ব্রাহ্মণের এই চেষ্টাকে কোনো একটি সম্প্রদায়বিশেষের স্বার্থসাধন ও ক্ষমতালাভের চেষ্টা মনে করিলে ইতিহাসকে সংকীর্ণ ও মিথ্যা করিয়া দেখা হয়। এ চেষ্টা তখনকার সংকটগ্ৰস্ত আৰ্বজাতির অন্তরের চেষ্টা । ইহা আত্মরক্ষার প্রাণপণ প্ৰযত্ন। তখন সমস্ত সমাজের লোকের মনে ব্রাহ্মণের প্রভাবকে সর্বতোভাবে অক্ষুঃ করিয়া তুলিতে না পারিলে যাহা চারিদিকে ভাঙিয়া পড়িতেছিল তাহাকে জুড়িয়া তুলিবার কোনো উপায় ছিল না । এই অবস্থায় ব্রাহ্মণদের দুইটি কাজ হইল। এক, পূর্বধারাকে রক্ষা করা, আর এক, নূতনকে তাহার সহিত মিলাইয়া লওয়া । জীবনীপ্রক্রিয়ার এই দুইটি কাজই তখন অত্যন্ত ,বাধাগ্রস্ত হইয়া উঠিয়াছিল বলিয়াই ব্ৰাক্ষণের ক্ষমতা ও অধিকারকে এমন অপরিমিত করিয়া তুলিতে হইয়াছিল। অনার্যদেবতাকে বেদের প্রাচীন মঞ্চে তুলিয়া লওয়া হইল, বৈদিক রুদ্র উপাধি গ্রহণ করিয়া শিব আর্ব-দেবতার দলে স্থান পাইলেন । এইরূপে ভারতবর্ষে সামাজিক মিলন ব্ৰহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বরে রূপ গ্রহণ করিল। ব্ৰহ্মায় আৰ্যসমাজের আরম্ভকাল, বিষ্ণুতে মধ্যাহ্নকাল, এবং শিবে তাহার শেষ পরিণতির রূপ রহিল। শিব যদিচ রুদ্রনামে আর্যসমাজে প্রবেশ করিলেন তথাপি তাহার মধ্যে আর্য ও অনার্ধ এই দুই মূতিই স্বতন্ত্র হইয়া রহিল। আর্ষের দিকে তিনি যোগীশ্বর, কামকে ভস্ম করিয়া নির্বাণের আনন্দে নিমগ্ন, তাহার দিগবাস সন্ন্যাসীর ত্যাগের লক্ষণ ; অনার্ষের দিকে তিনি বীভৎস, রক্তাক্ত গজাজিনধারা গঞ্জিকা ও ভাং ধুতুরায় উন্মত্ত। আর্ষের দিকে তিনি বুদ্ধেরই প্রতিরূপ এবং সেই রূপেই তিনি সর্বত্র সহজেই বুদ্ধমন্দিরসকল অধিকার করিতেছেন ; অন্যদিকে তিনি ভূত প্রেত প্রভৃতি শ্মশানচর সমস্ত বিভীষিকা এবং সর্পপূজা, বৃষপূজা, বৃক্ষপূজা, লিঙ্গপূজা প্রভৃতি আত্মসাৎ করিয়া সমাজের অন্তর্গত অনার্বদের সমস্ত তামসিক উপাসনাকে আশ্রয় দান করিতেছেন। একদিকে প্রবৃত্তিকে শাস্ত করিয়া নির্জনে ধ্যানে জপে তাহার সাধনা ; অন্যদিকে চড়কপূজা প্রভৃতি ব্যাপারে নিজেকে প্ৰমত্ত করিয়া তুলিয়া ও শরীরকে নানা প্রকারে ক্লেশে উত্তেজিত করিয়া নিদারুণভাবে ॐींशांद्र यांच्चांथनां । | এইরূপে আর্ষ অনার্বের ধারা গঙ্গাযমুনার মতো একত্র হইল তৰু তাহার দুই রং পাশাপাশি রহিয়া গেল। এইরূপে বৈষ্ণব ধর্মের মধ্যেও কৃষ্ণের নামকে আশ্রয় করিয়া যেসমস্ত কাহিনী প্রবেশ কৰিল তাহ পাওবসখা ভাগবতধর্মপ্রবর্তক বীরশ্ৰেষ্ঠ দ্বারকপুীর প্রকৃষ্ণের কথা নহে। বৈষ্ণব ধর্মের একদিকে ভগবদগীতার বিশুদ্ধ অবিমিশ্র