পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢>२ রবীন্দ্র-রচনাবলী বিরোধ না করিয়া কলকে আচ্ছন্ন করিয়া একদিন মাথা তুলিয়া উঠিবে এবং কল যখন আকাশে ধোয় উড়াইয়া ঘর্ঘর শৰে হাটের জন্ত মালেৰু বস্ত উদগার করিতে থাকিবে তখন এই বনস্পতি নিঃশবে দেশকে ফল দিবে, ছায়া দিবে এবং দেশের সমস্ত কলভাৰী বিহঙ্গদলকে নিজের শাখায় শাখায় আশ্রয়দান করিবে । l কিন্তু ওই কলটার সঙ্গে রক্ষা করিবার কথাই বা কেন বলা ? ওটা দেশের আপিস আদালত, পুলিসের থানা, জেলখানা, পাগলাগারদ, জাহাজের জেটি, পাটের কল প্রভৃতি আধুনিক সভ্যতার আসবাবের সামিল হইয়া থাক না। আমাদের দেশ যেখানে ফল চাহিতেছে ছায়া চাহিতেছে সেখানে কোঠাবাড়িগুলা ছাড়িয়া একবার মাটির দিকেই নামিয়া আসি না কেন ? গুরুত্ব চারিদিকে শিন্ত আসিয়া যেমন স্বভাবের নিয়মে বিশ্ববিদ্যালয় স্বষ্টি করিয়া তোলে, বৈদিককালে যেমন ছিল তপোবন, বৌদ্ধকালে যেমন ছিল নালন্দা, তক্ষশিলা—ভারতের দুর্গতির দিনেও যেমন করিয়া টোল চতুষ্পাঠী দেশের প্রাণ হইতে প্ৰাণ লইয়া দেশকে প্রাণ দিয়া রাখিয়াছিল তেমনি করিয়াই বিশ্ববিদ্যালয়কে জীবনের দ্বারা জীবলোকে স্বষ্টি করিয়া তুলিবার কথাই সাহস করিয়া বলা যাক না কেন ? স্বাক্টর প্রথম মন্ত্ৰ—“আমরা চাই !” এই মন্ত্র কি দেশের চিত্তকুহর হইতে একেবারেই শুনা যাইতেছে না ? দেশের যারা আচার্ষ, ধারা সন্ধান করিতেছেন, সাধনা করিতেছেন, ধ্যান করিতেছেন, তারা কি এই মন্ত্রে শিষ্যদের কাছে আসিয়া মিলিবেন না ? বাষ্প যেমন মেঘে মেলে, মেঘ যেমন ধারাবর্ষণে ধরণীকে অভিষিক্ত করে তেমনি করিয়া কবে র্তারা একত্র মিলিবেন, কবে তাদের সাধন মাতৃভাষায় গলিয়া পড়িয়া মাতৃভূমিকে তৃষ্ণার জলে ও ক্ষুধার অল্পে পূর্ণ করিয়া তুলিবে ? আমার এই শেষ কথাটি কেজো কথা নহে, ইহা কল্পনা । কিন্তু আজ পর্যন্ত কেজে কথায় কেবল জোড়াতাড়া চলিয়াছে, স্বষ্টি হইয়াছে কল্পনায়। । >७३२ ছবির অঙ্গ এক বলিলেন বহু হইব, এমনি করিয়া স্বাক্ট হইল-আমাদের স্বষ্টিতত্বে এই কথা বলে । একের মধ্যে ভেদ ঘটিয়া তবে রূপ আসিয়া পড়িল। তাহা হইলে রূপের মধ্যে দুইটি পরিচয় থাকা চাই, বছর পরিচয়, যেখানে ভেল; এবং একের পরিচয়, যেখানে মিল ।