পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিচয় ¢ »ዓ পক্ষে বৃথা হইল। ঘোড়াগোরুকে ঘোড়াগোরু করিয়া আঁকিবার জন্য রেখা প্রমাণ ভাব লাবণ্যের এত বড়ো উদযোগপর্ব কেন ? তাহ হইলে এমন কথাও কেহ মনে করিতে পারেন উত্তর-গোগৃহে গোরু-চুরি কাণ্ডের জন্যই উযোগ পর্ব, কুরুক্ষেত্রযুদ্ধের জন্ত নহে। সাদৃশ্বের দুইটা দিক আছে। একট, রূপের সঙ্গে রূপের সাদৃগু ; আর-একটা ভাবের সঙ্গে রূপের সাদৃত। একটা বাহিরের, একটা ভিতরের। দুটাই দরকার। কিন্তু সাদৃশুকে মুখ্যভাবে বাহিরের বলিয়া ধরিয়া লইলে চলিবে না। যখনই রেখা ও প্রমাণের কথা ছাড়াইয়া ভাব লাবণ্যের কথা পাড়া হইয়াছে তখনই বোঝা গিয়াছে গুণীর মনে যে ছবিটি আছে সে প্রধানত রেখার ছবি নহে তাহ রসের ছবি। তাহার মধ্যে এমন একটি অনির্বচনীয়তা আছে যাহা প্রকৃতিতে নাই। অন্তরের সেই অমৃতরসের ভাবচ্ছবিকে বাহিরে দৃপ্তমান করিতে পারিলে তবেই রসের সহিত রূপের সাদৃপ্ত পাওয়া যায়, তবেই অন্তরের সহিত বাহিরের মিল হয়। অদৃপ্ত তবেই দৃপ্তে আপনার প্রতিরূপ দেখে। নানারকম চিত্রবিচিত্র করা গেল, নৈপুণ্যের অন্ত রহিল না, কিন্তু ভিতরের রসের ছবির সঙ্গে বাহিরের রূপের ছবির সাদৃপ্ত রহিল না ; রেখাভেদ ও প্রমাণের সঙ্গে ভাব ও লাবণ্যের জোড় মিলিল না ;–হয়তো রেখার দিকে ক্রাট রহিল নয়তো ভাবের দিকে-পরম্পর পরম্পরের সদৃশ হইল না। বরও আসিল কনেও আসিল, কিন্তু অশুভ লগ্নে মিলনের মন্ত্র ব্যর্থ হইয়া গেল। মিষ্টান্নমিতরে জনা, বাহিরের লোক হয়তো পেট ভরিয়া সন্দেশ খাইয়া খুব জয়ধ্বনি করিল কিন্তু অস্তরের খবর ষে জানে সে বুঝিল সব মাটি হইয়াছে ! চোখ-ভোলানে চাতুরীতেই বেশি লোক মজে, কিন্তু, রূপের সঙ্গে রসের সাদৃশুবোধ যার আছে, চোখের আড়ে তাকাইলেই ষে-লোক বুঝিতে পারে রসটি রূপের মধ্যে ঠিক আপনার চেহারা পাইয়াছে কিনা, সেই তে রসিক। বাতাস যেমন স্বর্ষের কিরণকে চারিদিকে ছড়াইয়া দিবার কাজ করে তেমনি গুণীর সৃe কলাসৌন্দৰকে লোকালয়ের সর্বত্র ছড়াইয়া দিবার ভার এই রসিকের উপর। কেননা যে ভরপুর করিয়া পাইয়াছে সে স্বভাবতই না দিয়া থাকিতে পারে না,—সে জানে তন্ত্রইং যন্ন দীয়তে । সর্বত্র এবং সকল কালেই মাস্থ্য এই মধ্যস্থকে মানে ! ইহারা ভাবলোকের ব্যাঙ্কের কর্তা—এর নানাদিক হইতে নানা ডিপজিটের টাকা পায় - সে টাকা বস্তু করিয়া রাখিবার জন্ত নহে –সংসারে নানা কারবারে নানা লোক টাকা খাটাইতে চায়, তাহাদের নিজের মূলধন যথেষ্ট নাই—এই ব্যাঙ্কার নছিলে তাহাজের কাজ বন্ধ । ” এমনি করিয়া রূপের ভেদ প্রমাণে বাধা পড়িল, ভাবের বেগ লাবণ্যে সংঘত হইল, ভাবের সঙ্গে রূপের সাপ্ত পটের উপর সম্পূর্ণ হইবা ভিতরে বাহিরে পুরাপুরি মিল হইয় গেল-এই তো সব চুকিল। ইহার পর আর বাকি রছিল কী ?