পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিচয় do . (రి) তাদের বাপলার শাসন নাই সেখানে তারা কেবলই স্কুল করে, অঙ্গর করে, বিবাদ করে,—সেখানে তাদের ঈর্ষা, তাদের লোভ, তাদের অবিবেচনা। তাদের নিষ্ঠ পিতামহের প্রতি ; উদ্দেশ্বের প্রতি নয়। কেননা চিরদিন যারা মুক্ত তার উদ্দেশুকে মানে, যারা মুক্ত নয় তারা অভ্যাসকে মানে । এই কারণেই পরিবারের বাহিরে কোনো বড়ো রকমের যোগ আমাদের প্রকৃতির ভিতর দিয়া আজও সম্পূর্ণ সত্য হইয়াওঠে নাই। অথচ এই পারিবারিক যোগটুকুর উপর ভর দিয়া আজিকার দিনের পৃথিবীতে আমাদের প্রাণরক্ষা বা মানরক্ষা প্রায় অসম্ভব। আমরা নদীতে গ্রামের ঘাটে ঘাটে যে নৌকা বাহিয়া এতদিন আরামে কাটাইয়া দিলাম, এখন সেই নৌকা সমূত্রে আসিয়া পড়িল। আজ এই নৌকাটাই আমাদের পরম বিপদ । নৌকাটা যেখানে ঢেউয়ের ঘায়ে সর্বদাই টলমল করিতেছে সেখানে আমাদের স্বভাবের ভীরুতা ঘুচিবে কেমন করিয়া ? প্রতি কথায় প্রতি হাওয়ায় যে আমাদের বুক দুরন্থর করিয়া ওঠে। আমরা নূতন নূতন পথে নূতন নূতন পরীক্ষায় চলিব কোন ভরসায় ? _. সকলের চেয়ে সর্বনাশ এই যে, এই বহুযুগসঞ্চিত ভীরুতা আমাদিগকে মুক্তভাবে চিন্তা করিতে দিতেছে ন । এই কথাই বলিতেছে তোমাদের বাপদাদা চিন্তা করেন নাই, মানিয়া চলিয়াছেন, দোহাই তোমাদের, তোমরাও চিন্তা করিয়ো না, মানিয়া চলো । তারপরে সেই মানিয়া চলিতে চলিতে দুঃখে দারিদ্র্যে অজ্ঞানে অস্বাস্থ্যে যখন ঘর বোঝাই হইয়া উঠিল তখন সেবাধর্মই প্রচার কর আর চাদার খাতাই বাহির কর মরণ হইতে কেহ বাচাইতে পারিবে না। >७२२ আষাঢ় ঋতুতে ঋতুতে যে ভেদ সে কেবল বর্ণের ভেদ নহে, বৃত্তিরও ভেদ বটে। মাঝে মাঝে বর্ণসংকর দেখা দেয়—জ্যৈষ্ঠের পিঙ্গল জটা শ্রাবণের মেঘতুপে নীল হইয় উঠে, কান্ডনের খামলতায় বৃদ্ধ পৌষ আপনার পীত রেখা পুনরায় চালাইবার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রকৃতির ধর্মরাজ্যে এ সমস্ত বিপর্যয় টেকে না। গ্রীষ্মকে ব্রাহ্মণ বলা যাইতে পারে । সমস্ত রত্নাবাহুল্য দমন করিয়া, জঞ্জাল মারিয়া তপস্তাৱ আগুন জালিয়। সে নিবৃত্তিমার্গের মন্ত্রসাধন করে। সাবিত্ৰী-মন্ত্র জপ করিতে